English

25 C
Dhaka
সোমবার, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪
- Advertisement -

নিশ্চিত হোক বিকাশ: শিশুদের নিয়ে গবেষণা

- Advertisements -

শিশুদের কাছে জীবনের শুরুতেই শিক্ষা আনন্দদায়ক হওয়ার পরিবর্তে ভীতিকর একটা ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। যে বয়সে খেলার ভেতর দিয়ে শিক্ষার আনন্দদায়ক পাঠ নেওয়ার কথা, সেই বয়সে একটি শিশুকে টানতে হয় বই-খাতার বোঝা। পাঠভীতির কারণে সে বঞ্চিত হয় শেখার আনন্দ থেকে। এর বাইরে আছে নাগরিক জীবনের নানা অনুষঙ্গ।

একই সঙ্গে আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও। তার প্রভাব পড়ছে শরীর ও মনে। এর প্রভাব কত ক্ষতিকর হতে পারে, তা উঠে এসেছে সাম্প্রতিক সময়ের এক গবেষণায়।
গত বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের আয়োজনে ‘শিশুস্বাস্থ্য, বিকাশ ও সুরক্ষা’ শীর্ষক আলোচনাসভায় শিশুদের নিয়ে বিভাগটির গত পাঁচ বছরের গবেষণার প্রকাশিত ফল বলছে, টানা পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বসে থাকায় ১৬.২ শতাংশ কিশোর-কিশোরী উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকিতে। ওই গবেষণায় দেখা গেছে, ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী পর্যাপ্ত ফল ও শাক-সবজি খাচ্ছে না।
৮৮ শতাংশ কিশোর-কিশোরী ইন্টারনেট ব্যবহার করছে আর অনলাইনে যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে ৫৬ শতাংশ কিশোর এবং ৬৪ শতাংশ কিশোরী। গবেষণায় দেখা গেছে, শৈশবকালীন বিরূপ অভিজ্ঞতা পরবর্তী জীবনে মানসিক, আচরণগত ও শারীরিক বিকাশজনিত ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। একই সঙ্গে প্রাপ্তবয়স্কদের রোগ ও মৃত্যুহার বাড়ায়।
আর এ জন্য গ্রাম ও শহর—উভয় এলাকায় প্রয়োজন পর্যাপ্ত খেলার মাঠ। শহরের আবাসিক এলাকায় খেলার মাঠ শুধু সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্যই প্রয়োজন নয়, এর প্রয়োজনীয়তা স্বাস্থ্যগত এবং পরিবেশগত কারণেও। আর আমাদের দুর্ভাগ্য, শহরাঞ্চলে ঘিঞ্জি বসতিতে মানুষের শ্বাস নেওয়ার জন্য এক টুকরা খালি মাঠ পাওয়া যায় না। কবুতরের খোপের মতো একেকটি ঘরে বাস করে শিশু-কিশোররা। এই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বেড়ে ওঠা আমাদের শিশু-কিশোররা তাদের স্বাস্থ্যগত সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার কারণে নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাও ঘটছে।
শরীরে মেদ জমছে শারীরিক পরিশ্রম করার সুযোগ না থাকার কারণে। স্কুলগুলোতেও কবুতরের খোপের মতোই একেকটি শ্রেণিকক্ষ। খেলার মাঠ নেই। ফলে তারা খেলাধুলার সুযোগ বলতে ঘরে বসে কম্পিউটার গেমকেই বুঝে থাকে। প্রায় এক দশক আগে বারডেমের বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, দেশে শিশুদের মধ্যেও ডায়াবেটিসের প্রবণতা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে। এটা হয়েছে শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় খেলার মাঠ না থাকা। অন্যদিকে অতিমাত্রায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারের ফলে শিশুর সামাজিক যোগাযোগ ও শারীরিক কসরত কমে যাচ্ছে। কমে যাচ্ছে স্বাভাবিক স্নায়বিক বিকাশ। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে সামাজিক দক্ষতা ও মনস্তাত্ত্বিক উন্নতি।

এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন আমাদের শিশুদের জন্য পর্যাপ্ত খেলার মাঠের ব্যবস্থা করে দেওয়া।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন