বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোনো ব্যবস্থাই নিতে পারছে না। ক্রেতারা জিম্মি এবং উপায়হীন। তাই তারা মনে ক্ষোভ নিয়েও বাধ্য হচ্ছে বেশি দামে পণ্য কিনতে।
পণ্যমূল্য বাড়িয়ে মানুষের পকেট কাটতে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী বরাবরই নানা ধরনের অজুহাত তৈরি করেন।পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এবার তাঁদের অজুহাত, ভারতে পেঁয়াজ রপ্তানিতে শুল্ক আরোপ। প্রকাশিত খবরে জানা যায়, ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে গত শনিবার।
বর্ধিত শুল্কে রবিবারও যদি কেউ পেঁয়াজ আমদানির উদ্যোগ নেন, সেই পেঁয়াজ দেশে আসতে বেশ কয়েক দিন লেগে যাবে। অথচ শনিবার রাতেই দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
আর পেঁয়াজ তো শুধু ভারত থেকে আসে না, মিয়ানমার থেকেও অনেক পেঁয়াজ আসে। সেই পেঁয়াজেরও দাম বেড়ে গেছে। দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজে কোনো শুল্ক আরোপিত হয়নি।তার দামও বেড়ে গেছে। ব্যবসায়ীদের এহেন কর্মকাণ্ডকে কিভাবে ব্যাখ্যা করা যাবে? এটি কি শুধুই স্বেচ্ছাচারিতা নয়? এক সপ্তাহ আগে চিনি ও সয়াবিন তেলের দাম কমানো হয়েছে।এখনো বাজারে সেই দামে চিনি, তেল পাওয়া যায় না। দোকানদারদের বক্তব্য, ‘আমার এই তেল আগের কেনা।’ তাহলে পেঁয়াজের দাম তাঁরা বেশি নেন কিভাবে?সরকার এখন ভারতের বিকল্প হিসেবে মিয়ানমার, তুরস্ক, মিসর, চীনসহ অন্যান্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি বাড়ানোর কথা ভাবছে। এরই মধ্যে এসব দেশ থেকে আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু কিছু আমদানিকারকের ওপর ভরসা করে বসে থাকলে হবে না।ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (টিসিবি) এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করতে হবে। আমদানির পাশাপাশি খোলাবাজারে পেঁয়াজ বিক্রি বাড়াতে হবে।পাশাপাশি দেখতে হবে, শনিবার রাত থেকেই পাইকারি বাজারগুলোতে কিসের ভিত্তিতে অতিরিক্ত দাম নেওয়া হচ্ছে। জানা যায়, এরই মধ্যে ১৩ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু এসেছে মাত্র তিন লাখ টন। বাকি পেঁয়াজ কেন আমদানি করা হয়নি তা-ও খতিয়ে দেখতে হবে।আমরা মনে করি, বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। অনৈতিক মুনাফাকারীদের ছাড় দেওয়া যাবে না। টিসিবিকে আরো সক্রিয় ও জোরদার করতে হবে। যেকোনো আপৎকালে যেন দ্রুত আমদানি, সরবরাহ এবং পাইকারি ও খুচরা বিক্রির মাধ্যমে সারা দেশের বাজারে প্রভাব রাখতে পারে, সেভাবে টিসিবিকে গড়ে তুলতে হবে।