আমাদের সমাজ থেকে নৈতিকতাবোধ যেন নির্বাসিত হয়েছে। মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ও চরমে। সামাজিক সুরক্ষা ও নিরাপত্তার প্রশ্ন এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে, বাড়ছে অপরাধপ্রবণতা।
ভোলার ঘটনাটি আমাদের সামাজিক অবক্ষয়ের দিকটিই নতুন করে উন্মোচিত করছে। প্রতিকারহীনভাবে একের পর এক ঘটনা ঘটেই চলেছে। প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, ভোলা শহরের বক ফোয়ারার পারে অনেক মানুষ একইভাবে বখাটেদের হামলার শিকার হয়েছে। বখাটেরা স্কুল-কলেজের ছাত্রী কিংবা কোনো নারী দেখলেই উত্ত্যক্ত করে। ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করে না।
বখাটেদের ভয়ে অনেক শিক্ষার্থী ওই স্থান দিয়ে এখন আর চলাফেরা করে না। অথচ এই বক ফোয়ারার কাছাকাছি জেলা প্রশাসকের বাসভবন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কার্যালয়, জেলা পরিষদ ভবন, পৌরসভা ভবন ও ভোলা প্রেস ক্লাবের অবস্থান। এমন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে দিনের পর দিন বখাটেরা বেপরোয়া আচরণ করে যাচ্ছে। দেখার কি কেউ নেই?
বর্তমান সময়ে সমাজ-মানসিকতার যে অবনতি হয়েছে, তাতে বখাটেপনা যে এক ধরনের যৌন সন্ত্রাসে রূপ নিয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। অতীতে বখাটেদের হাত থেকে রক্ষা পেতে অনেক মেয়েকেই আত্মহননের পথ বেছে নিতে হয়েছে।
কোনো একটি ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর প্রতিবাদ হয়, কোথাও কোথাও মানববন্ধন হয়। কিন্তু আবার সেই আগের চেহারায় ফিরে আসে বখাটেরা। ভোলায় বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকবার জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় বলা হলেও প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
পারিবারিক ও সামাজিক অনুশাসন ফিরিয়ে আনা, মূল্যবোধ নতুন করে প্রতিষ্ঠা করা—এসব কথা অনেক বলা হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়েছে বলে মনে হয় না। আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে আরো কঠোর হতে হবে। বখাটেদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই।
বখাটেপনা রুখতে দ্রুত বিচার করতে হবে। শাস্তির দৃষ্টান্ত স্থাপন করা গেলে এ ধরনের অপরাধ কমে আসবে বলে মনে করি। আমরা আশা করি বখাটেপনা রুখতে সম্ভব সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।