তবে কারা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, কারাগারের ভেতর থেকে মোবাইল ফোনে কথা বলার সুযোগ নেই। আর সালমান এফ রহমানকে যেখানে বন্দি রাখা হয়েছে, সেখানে জ্যামার বসানো আছে। তার পরও যেহেতু মোবাইল ফোন ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে, তাই বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।
কারাগারে বন্দিদের এমন অবৈধ সুযোগ-সুবিধা প্রদানের অভিযোগ নতুন নয়।
অতীতে অনেক শীর্ষ সন্ত্রাসী কারাগারে বসে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করত বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০২১ সালের জুলাই মাসে কারাগারে বসে ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমিন মোবাইল ফোনে জুম মিটিং করেছিলেন বলে খবর প্রকাশ পায়। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওই সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) প্রিজন সেলের প্রধান কারারক্ষীসহ আটজনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে কারা কর্তৃপক্ষ গোপন সংবাদে জানতে পারে, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এ কনডেম সেলে থাকা নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত সাত খুন মামলার অন্যতম আসামি নূর হোসেন মোবাইল ফোন ব্যবহার করছেন।পরে অভিযান চালিয়ে ওই মোবাইল ফোন উদ্ধার করে কারা কর্তৃপক্ষ। জানা যায়, শুধু কারারক্ষীদের নয়, কারা কর্মকর্তাদেরও কারাগারের অভ্যন্তরে মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ। আবার বন্দিদের কাছে মোবাইল ফোন কিংবা মাদক রয়েছে কি না তা উদ্ধারে মাঝেমধ্যে রুটিন তল্লাশি চালানো হয়। এন্ট্রি পয়েন্টেও তল্লাশির ব্যবস্থা রয়েছে। এত কিছুর পরও কারাগারে বন্দিদের কাছে চলে যায় মোবাইল ফোন।মূলত মোটা অঙ্কের টাকার লোভেই কারাগারের কিছু কর্মকর্তা বা কারারক্ষী ঝুঁকি নিয়েই এসব কাজ করেন। কখনো কখনো কিছু সময়ের জন্য জ্যামার বন্ধ করে দেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া যায়।
কারাগারের এমন অবৈধ কর্মকাণ্ড অনেক সময় রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাও ঝুঁকিতে ফেলে। অনেক গোপন তথ্য বাইরে চলে যায়। আর সাবেক মন্ত্রী-এমপিরা যদি কারাগারে বসে বাইরে যোগাযোগ করতে পারেন, তাহলে রাষ্ট্রে শৃঙ্খলা বিনষ্টের মতো অনেক ঘটনাও ঘটানো সম্ভব। আমরা মনে করি, কারাগারে বসে সালমান এফ রহমানের মোবাইল ফোন ব্যবহারের অভিযোগটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হবে। এই কাজে কারা কর্মকর্তা কিংবা কারারক্ষী কারো সংস্রব পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।