English

22 C
Dhaka
সোমবার, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪
- Advertisement -

কারণ খুঁজে ব্যবস্থা নিন: জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়

- Advertisements -

মঙ্গলবার বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় দেখা দিয়েছিল। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রায় অর্ধেক অংশ বিদ্যুত্হীন হয়ে পড়েছিল। দুপুর ২টা ৫ মিনিটে শুরু হয় এই বিপর্যয়। সাড়ে তিন ঘণ্টা পর বিকেল সাড়ে ৫টায় কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করে বিদ্যুৎ বিভাগ।

রাত ১০টা পর্যন্ত ৫০ শতাংশ এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয় বলে প্রকাশিত খবরে জানা যায়। অবশ্য ডিপিডিসি ও ডেসকো জানায়, এই সময়ের মধ্যে তারা ৮০ শতাংশ এলাকায় আবার বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে সক্ষম হয়েছে। ঢাকা ছাড়াও ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ফলে মানুষের জীবনযাত্রায় এক দুর্বিষহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় বেশির ভাগ বহুতল ভবন ও বিপণিবিতানের জেনারেটরও তেলের অভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
পাম্পগুলোতে তেলের জন্য মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ে। অন্ধকারে থাকার পাশাপাশি শহরাঞ্চলে পানির সরবরাহও বন্ধ হয়ে যায়। বিদ্যুতের অভাবে বহু সিএনজি স্টেশন বন্ধ হয়ে যায়। সিএনজিচালিত বহু যানবাহনের চলাচল থেমে যায়। হাসপাতালগুলোতে জরুরি চিকিৎসা কার্যক্রম পর্যন্ত ব্যাহত হয়। রোগীদের দুর্ভোগ চরমে ওঠে। কিন্তু গ্রিড ব্যবস্থায় কেন এমন বিপর্যয় দেখা দিয়েছিল তার সঠিক কারণ জানাতে পারেনি বিদ্যুৎ বিভাগ। কারণ অনুসন্ধানে একাধিক তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে।
দেশ এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনে মোটামুটিভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ। কিন্তু সমস্যা রয়েছে সঞ্চালন ও সরবরাহ ব্যবস্থায়। ফলে প্রায়ই নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। এর আগেও জাতীয় গ্রিডে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটেছে। একবার ঘটেছে ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে। তখন ১০ ঘণ্টারও বেশি সারা দেশ বিদ্যুত্হীন ছিল। আরেকবার গ্রিড বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেছিল ২০১৭ সালের মে মাসে। তখনো দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমের ৩২টি জেলা কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুত্হীন ছিল। গত মাসেও জাতীয় গ্রিডের আরেকটি সঞ্চালন লাইনে বিভ্রাটের কারণে রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল বিভাগসহ দেশের বিস্তীর্ণ এলাকা প্রায় দেড় ঘণ্টা বিদ্যুত্হীন থাকে। যান্ত্রিক বিষয়ে ত্রুটিবিচ্যুতি ঘটতেই পারে। কিন্তু তার কারণ অনুসন্ধান করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে বা খুব কম ঘটে।
বিপর্যয় যদি হয় রক্ষণাবেক্ষণে অবহেলাজনিত কারণে কিংবা সময়মতো পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণে, তাহলে সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। আরেকটি আশঙ্কাও থেকে যায়, সেটি হলো ভেতর থেকে কিংবা বাইরে থেকে নাশকতার চেষ্টা। তেমন হলে বিদ্যুৎ বিভাগের নিরাপত্তায় আরো বেশি জোর দিতে হবে।
আমরা চাই দ্রুত জাতীয় গ্রিড বিপর্যয়ের রহস্য উদঘাটন করা হোক। বিদ্যুৎ না থাকলে জনজীবনে কী ধরনের দুর্ভোগ হতে পারে দেশের মানুষ গত মঙ্গলবার তা প্রত্যক্ষ করেছে। এ ধরনের দুর্ভোগ যাতে জনজীবনে বারবার নেমে না আসে সে জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নিতে হবে।
সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়নে সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। জাতীয় গ্রিডের রক্ষণাবেক্ষণে অনেক বেশি উদ্যোগী হতে হবে। পাশাপাশি নাশকতার আশঙ্কা বিবেচনায় নিয়ে বিদ্যুৎ স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে।
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন