আইপি বা ইন্টারনেট প্রটোকল টিভি এখন এক নতুন যন্ত্রণা হয়ে দেখা দিয়েছে। ইন্টারনেট সহজলভ্য হয়েছে। হাতের মুঠোয় এসে গেছে স্মার্টফোন। ভিডিও গ্রহণ থেকে সম্পাদনাও এখন অনেক সহজ। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে পাড়া-মহল্লায় গজিয়ে উঠেছে টেলিভিশন চ্যানেল। এসব চ্যানেলের কোনো মান নেই। দেখারও কেউ নেই। অনেক ক্ষেত্রেই এসব টেলিভিশনের কারণে মূলধারার টেলিভিশন চ্যানেলগুলো প্রশ্নের মুখে পড়ছে। প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে অনেক আইপি টিভির মালিকানা এখন চিহ্নিত খুনি সন্ত্রাসীদের হাতে। এসব চ্যানেলে সাংবাদিক নিয়োগ দেওয়ার নামে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। আবার সাংবাদিক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্তরাও চাঁদাবাজিতে লিপ্ত। সাংবাদিকতা নয়, অপসাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত এসব আইপি টিভি। আইপি টিভির নামে এসব টেলিভিশন চ্যানেলের কোনো অনুমোদন নেই। সম্প্রতি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী জানিয়েছেন, দেশে অসংখ্য আইপি টিভি আছে, যেগুলোর অনুমোদন নেই। আবেদন আহ্বান করা হয়েছে, ৬০০-এর মতো আবেদন পড়েছে। শিগগিরই সরকার আইপি টিভির অনুমোদন দেবে।
অনুমোদনহীন আইপি টিভির সাংবাদিকরা রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। মূলধারার সাংবাদিকরাও অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের কাছে কোণঠাসা। সাংবাদিকতার নামে তাঁরা যা করছেন, অনেক ক্ষেত্রেই সেটা প্রতারণা। শুধু সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা নয়, সরকারি-বেসরকারি দপ্তরে গিয়ে ব্ল্যাকমেইল করার অভিযোগও আছে। অনেকে নিজেদের নামে ইউটিউব চ্যানেল খুলেও এসব করছেন। সংবাদের নামে প্রচার করা হচ্ছে ভিত্তিহীন খবর। অথচ এসব চ্যানেলের খবর সম্প্রচারের কোনো অনুমোদন নেই। তা সত্ত্বেও খবর প্রকাশ করে তারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
অনুমোদনহীন এসব আইপি টিভির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। এসব আইপি টিভির মালিকানায় সমাজের একটি অপরাধীচক্র থাকায় সংবাদমাধ্যমের মান শুধু নয়, গ্রহণযোগ্যতাও বড় ধরনের প্রশ্নের মুখে পড়বে। আমরা আশা করব একটি সুন্দর পরিচ্ছন্ন নীতিমালার আওতায় আইপি টিভির অনুমোদন দেওয়া হবে। মেনে চলা হবে সম্প্রচার মাধ্যমের নৈতিকতাও।