কারেন্ট জালে ২৩ সেন্টিমিটারের ছোট ইলিশ মাছ বা জাটকা ধরা পড়ে। জাটকা নিধনের কারণে ইলিশের উৎপাদন সংকটের মধ্যে পড়েছে। ইলিশসহ মত্স্যসম্পদ সংরক্ষণে দেশে কারেন্ট জাল উৎপাদন, পরিবহন, বাজারজাতকরণ, সংরক্ষণ ও ব্যবহার আইন করে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সরকারের জারি করা মত্স্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ আইনের ৪(১) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি কারেন্ট জালের উৎপাদন, বুনন, আমদানি, বাজারজাতকরণ, সংরক্ষণ, বহন, মালিক হতে পারবেন না বা ব্যবহার করতে পারবেন না।
এ সময় চলা অভিযানে ১৮১ কোটি ৪২ লাখ ৪৮ হাজার ৪২৩ মিটার জাল জব্দ করা হয়। মা-ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে পাঁচ বছরে ৪৭৭ কোটি ২৮ লাখ ৭৯ হাজার ৫৪৭ মিটার জাল জব্দ করেছে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো।
মত্স্য অধিদপ্তরের ‘বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ ক্যাপাসিটি বিল্ডিং প্রজেক্ট’ প্রকল্পের এক সমীক্ষায় দেখানো হয়, কারেন্ট জাল উৎপাদন বন্ধ করতে পারলে দেশে অতিরিক্ত সাড়ে তিন লাখ টন ইলিশ উৎপাদন সম্ভব।
ইলিশ আমাদের জাতীয় সম্পদ। এদের রক্ষা করার দায়িত্বও আমাদের।ইলিশ সাগরের তথা নোনা পানির মাছ হলেও ডিম পাড়তে মা-ইলিশ নদীর অপেক্ষাকৃত কম নোনা বা মিঠাপানিতে চলে আসে। বিশেষ করে প্রজনন মৌসুমে মা-ইলিশ দলে দলে নদীতে প্রবেশ করে।
এরপর ডিম ফুটে যে বাচ্চা ইলিশ বেরিয়ে আসে, সেগুলো কিছুটা বড় হলে আবার সাগরের নোনা পানিতে ফিরে যায়। এ সময়টায় এসব উপকূলীয় নদীতে কারেন্ট জাল ফেললে ব্যাপক হারে কেবল মা-ইলিশ ও জাটকা ধরা পড়ে। অতীতে এই সংরক্ষণের কাজটি ঠিকমতো না করায় দেশে ইলিশের রীতিমতো সংকট তৈরি হয়েছিল।
আমাদের জাতীয় সম্পদের সুরক্ষা ও বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় কাজ করতে হবে। কারেন্ট জাল উৎপাদন, বুনন, আমদানি, বাজারজাতকরণ, সংরক্ষণ, বহন ও ব্যবহার বন্ধ করার পাশাপাশি বাজারে জাটকা বিক্রিও বন্ধ করতে হবে।
জালের উৎস ও জাটকা বিক্রির জায়গা বন্ধ করা গেলে জাল ব্যবহার এমনিতেই বন্ধ হয়ে যাবে।