কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, তিন দশক পার হয়ে এসেও দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কি সত্যিকার অর্থে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে মান ধরে রাখতে পেরেছে বা পারছে? নিয়ম অনুযায়ী কি একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে? শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দায়িত্ব।
কিন্তু সেই দায়িত্ব উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলো কতটুকু পালন করছে? বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর গবেষণার তেমন সুযোগ নেই।
প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, দেশের পাঁচটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে একই সঙ্গে উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের পদ ফাঁকা। এ ছাড়া অন্তত ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই দুটি পদের একটি খালি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক দিকগুলো দেখাশোনা করেন উপাচার্য। আর্থিক কর্মকাণ্ড সম্পাদন করেন কোষাধ্যক্ষ। এসব পদ শূন্য রেখে কার্যক্রম পরিচালনা করায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ লঙ্ঘিত হচ্ছে। দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়মের মধ্যে আনতে ২০১০ সালে পাস হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন।এ আইন অনুযায়ী এসব পদে আচার্য কর্তৃক নিয়োগ নিশ্চিত করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বেশির ভাগই ইউজিসি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিধি-বিধান খুব একটা অনুসরণ করছে না। শিক্ষা বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে।সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এসব পদ ফাঁকা রেখে শিক্ষা ও আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনা অবৈধ। বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির সুযোগ নিতে এসব পদ ফাঁকা রাখা হয়।একাডেমিক কার্যক্রমের মানোন্নয়নে এবং আর্থিক কর্মকাণ্ড স্বচ্ছতার সঙ্গে পরিচালনার স্বার্থে পদ দুটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে এসব পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।পদ দুটিতে নিয়োগের মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার অন্তত চার মাস আগে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে প্যানেল পাঠানোর বাধ্যবাধকতা দিয়েছে ইউজিসি। অথচ কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন, আবার কোনোটিতে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এসব পদ ফাঁকা।সংশ্লিষ্টদের মতে, তিন কারণে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয় না। এর মধ্যে প্রধান ও অন্যতম কারণ ট্রাস্টি বোর্ডের ক্ষমতা চর্চা ও আর্থিক অনিয়ম।আচার্য থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত উপাচার্য না থাকলে ট্রাস্টি বোর্ডকে প্রশ্ন করার মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে আর কোনো পদ থাকে না। আমরা মনে করি, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেরই আইন মেনে চলা উচিত।