ইন্টারনেট সংযোগ থেকে শুরু করে মোবাইল ব্যাংকিং—সব ক্ষেত্রে মোবাইল ফোন ব্যবহৃত হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে গণমাধ্যম—সবই এখন মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায়। আগে শুধু কথা বলা বা খুদে বার্তা পাঠানোর কাজে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন এখন চিকিৎসকের পরামর্শসেবা থেকে শুরু করে ই-কমার্সের নতুন নতুন দিগন্তও খুলে দিচ্ছে।
সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে মোবাইল ফোনের ওপর নির্ভর করে। বহুমুখী ব্যবহারের কারণেই মোবাইল ফোন জনপ্রিয় হয়েছে। অন্যদিকে গ্রাহককে আকৃষ্ট করার জন্য নতুন নতুন অফার আসছে মোবাইল ফোন কম্পানিগুলোর কাছ থেকে।
দেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে। প্রতিদিন নতুন নতুন গ্রাহক মোবাইল নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। সব মিলিয়ে বলা যায়, মানুষের জীবনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে গেছে মোবাইল ফোন।
গ্রাহকের সংখ্যা বৃদ্ধি বলে দেয় দেশের মোবাইল অপারেটররা ভালো ব্যবসা করছে। ২০১২ সালে দেশে ব্যবহৃত সিম অনুযায়ী মোবাইল গ্রাহক ছিল আট কোটি ৬৬ লাখ। ২০২২ সালে তা বেড়ে হয় ১৮ কোটি ৩৪ লাখ। ২০১২ সালে ইন্টারনেট গ্রাহক ছিল দুই কোটি ৮৯ লাখ, ২০২২ সালে এই সংখ্যা বেড়ে হয় ১২ কোটি ৪২ লাখ।২০১২ সালে দেশে টেলিডেনসিটি ছিল ৬০.৯ শতাংশ, ২০২২ সালে টেলিডেনসিটি ১০৫.৮৫ শতাংশ। ইন্টারনেট ডেনসিটি ছিল ১৯.৯৯ শতাংশ, এখন তা বেড়ে হয়েছে ৭১.৫৭ শতাংশ।
অর্থাৎ অপারেটরদের ব্যবসার পরিধি বাড়ছে। কিন্তু এর বিনিময়ে সরকারের প্রাপ্তিটা কি মেটাচ্ছে তারা? গত সোমবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে জানানো হয়েছিল, দেশের মোবাইল অপারেটরগুলোর কাছে সরকারের পাওনা সাত হাজার ৮২০ কোটি তিন লাখ টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোবাইল অপারেটর কম্পানিগুলো সরকারকে তিন হাজার ১৭৮ কোটি ৯১ লাখ টাকা রাজস্ব পরিশোধ করেছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, পাওনা আদায়ে কী করা হচ্ছে? ২০২২ সালের জুনে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছিলেন, দেশের চার মোবাইল অপারেটরদের কাছে সরকারের পাওনার পরিমাণ ১৩ হাজার ৬৮ কোটি টাকা। এখন বকেয়া সাত হাজার ৮২০ কোটি তিন লাখ টাকা। বকেয়া থাকছে কেন? আদায় করার কোনো সুযোগ নেই? পাওনা টাকা আদায়ে সরকার কঠোর হবে, এটাই প্রত্যাশা।