English

22 C
Dhaka
শনিবার, জানুয়ারি ১১, ২০২৫
- Advertisement -

আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করুন: ভরাট হয়ে যাচ্ছে রাজশাহীর পুকুর

- Advertisements -
দেশের এক বড় অংশজুড়ে মরুকরণ প্রক্রিয়া এগিয়ে চলেছে। রাজশাহী অঞ্চল তার মধ্যে অন্যতম। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ক্রমেই নিচে নেমে যাচ্ছে। তিন-চার শ ফুট গভীরে নলকূপ স্থাপন করেও পানি উত্তোলন করা যাচ্ছে না।
গভীর নলকূপে পানি না ওঠায় বোরো চাষ ব্যাহত হচ্ছে। শহর এলাকায় নাগরিকদের পানি সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। এর প্রধান কারণ ভূগর্ভে পানির অনুপ্রবেশ ব্যাহত হওয়া। সাধারণত বৃষ্টির পানি সঙ্গে সঙ্গেই নদীনালা দিয়ে বয়ে চলে যায়।
পুকুর, জলাশয় বা নদীনালায় থাকা পানি সারা বছর ধরে একটু একটু করে ভূগর্ভে প্রবেশ করে। সেই সুযোগ ক্রমেই কমে যাচ্ছে। আর তার পরিণতি হিসেবে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নামছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, অচিরেই এই প্রক্রিয়া বড় ধরনের বিপর্যয়ের কারণ হবে।

কিন্তু তার পরও কি আমাদের হুঁশ হচ্ছে?প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, রাজশাহী নগরীতে গত পাঁচ দশকে তিন হাজারের বেশি পুকুর ও জলাশয় ভরাট করা হয়েছে। নির্মাণ করা হয়েছে বিভিন্ন স্থাপনা। এটি যেমন সরকারিভাবে করা হয়েছে, তেমনি হয়েছে ব্যক্তি পর্যায়েও। নদী ও জলাশয় গবেষক মাহাবুব সিদ্দিকীর গবেষণায় উঠে এসেছে, ১৯৮১ সালে পুকুর-জলাশয়ের সংখ্যা ছিল দুই হাজার ২২৭। ২০০০ সালে কমে হয় ৭২৯।

২০০৯ সালে সেই সংখ্যা দাঁড়ায় ৩১৩তে। ২০১৫ সালে গিয়ে দাঁড়ায় দুই শর মতো। রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের জরিপেও ২০০৪ সালে নগরীতে পুকুর পাওয়া গিয়েছিল এক হাজার ৯২৫টি। এরপর আর কোনো জরিপ হয়নি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, এখন পুকুর আছে দেড় থেকে দুই শর মতো। অবশিষ্ট অনেক পুকুরই ময়লা-আবর্জনা ফেলে ধীরে ধীরে ভরাট করা হচ্ছে।

পরিবেশ আইন ১৯৯৫ এবং প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন ২০০০-এর বিধান অনুসারে সরকারি হোক কিংবা ব্যক্তিমালিকানাধীন হোক, কোনো প্রাকৃতিক জলাশয় ভরাট করা যাবে না। ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর প্রকাশিত এক রায়ে ব্যক্তিমালিকানাধীন হিসেবে রেকর্ড করা পুকুরগুলো জলাধার সংরক্ষণ আইনের ২(চ) ধারা অনুযায়ী প্রাকৃতিক জলাধারের সংজ্ঞাভুক্ত করে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। প্রাকৃতিক জলাধার আইন ২০০০-এর ৫ ধারায়ও বলা হয়েছে, ‘…প্রাকৃতিক জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গার শ্রেণি পরিবর্তন করা যাইবে না বা উক্তরূপ জায়গা অন্য কোনভাবে ব্যবহার করা যাইবে না বা অনুরূপ ব্যবহারের জন্য ভাড়া, ইজারা বা অন্য কোনভাবে হস্তান্তর করা যাইবে না।’ তার পরও প্রতিনিয়ত এভাবে পুকুর ভরাট হচ্ছে কিভাবে?

শুধু রাজশাহী নয়, সারা দেশেই চলছে এভাবে পুকুর ভরাটের মতো আত্মঘাতী ও অবৈধ কাজকর্ম। এটি রোধে প্রশাসনকে আন্তরিক হতে হবে। এসংক্রান্ত আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন