বিশ্বায়নের এই যুগে শুধু দেশীয় বিনিয়োগের দিকে তাকিয়ে থাকলে চলবে না, বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে হবে। বিদেশি বিনিয়োগ এলে দেশের অর্থনীতিতে যেমন নতুন গতির সঞ্চার হবে, তেমনি নতুন নতুন বিদেশি বিনিয়োগের পথ সুগম হবে।
প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, চট্টগ্রামের কাছে কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন (কেইপিজেড) পরিদর্শনকালে ডিপ্লোমেটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক বলেছেন, দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী। বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে তাঁর দেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তি (ইপিএ) সংক্রান্ত চলমান আলোচনার তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, কোরিয়া বর্তমানে বাংলাদেশকে জেনারালাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্স (জিএসপি) প্রদান করছে। ইপিএ পারস্পরিক সুবিধার জন্য দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াবে। তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহযোগিতা তহবিল, কোরীয় সরকারের কাছ থেকে সফট লোন বা পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ মেকানিজমের মাধ্যমে অনেক প্রকল্প নিয়ে আলোচনা চলছে।
বিদেশি বিনিয়োগ যেকোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত।
তাই দেশের স্বার্থে সৃষ্টি করতে হবে বিনিয়োগের সুস্থ পরিবেশ। অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে গিয়েছিলেন জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে। সেখানে তিনি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। আশানুরূপ সাড়াও মিলেছে। চীনের প্রস্তাবে বড় বিনিয়োগের সোলার প্লান্ট স্থাপন, নেপালের পক্ষ থেকে জলবিদ্যুৎ, জ্বালানি আমদানিসহ বিভিন্ন খাতে সহায়তারও আশ্বাস এসেছে বিশ্বনেতাদের কাছ থেকে। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে সংস্কারে খরচের জন্য সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দিতে সম্মত হয়েছে।
বিনিয়োগ ছাড়া প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। আর সে কারণে আমাদের বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিতে হবে। বিনিয়োগ পরিবেশ, স্বচ্ছ আইনকানুন ও নিয়ন্ত্রণমূলক বিধি-বিধান, স্থিতিশীলতা এবং কার্যকর জাতীয় প্রতিষ্ঠান হচ্ছে বিদেশি বিনিয়োগের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী হয়েছে। এতে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনা সূচিত হবে—আমরা আশাবাদী।