প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, রাজধানীতে গত ৯ মাসে ২১৫টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ছিনতাইকারীর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সাতজন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে দুই শতাধিক।
রাতে যেসব স্থানে পুলিশ টহল থাকে না সেসব জায়গায় ছিনতাই বেশি হচ্ছে। বেশির ভাগ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে রাত ১২টার পর।
ডিএমপির তথ্য অনুযায়ী, ঢাকার আটটি অপরাধপ্রবণ বিভাগের মধ্যে ছিনতাইয়ের ঘটনা বেশি ঘটছে তেজগাঁও, উত্তরা, মিরপুর, ধানমণ্ডি, ওয়ারী ও মতিঝিল এলাকায়। অর্থাৎ ঢাকার ছিনতাইয়ের স্পটগুলো অনেক আগে থেকেই চিহ্নিত। আবার পুলিশের তথ্য নিয়ে প্রকাশিত খবরে এটাও বলা হয়েছে যে ঢাকায় প্রায় ছয় হাজার ছিনতাইকারী রয়েছে। অর্থাৎ ছিনতাইকারীরাও চিহ্নিত।তাহলে নিরাপত্তা দিতে বাধা কোথায়? ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে কী করে? তালিকা ও তথ্য থাকার পরও ছিনতাইকারীদের কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না, এমন প্রশ্ন তো আসতেই পারে।পুলিশ বলছে, ছিনতাইকারীদের একটি বড় অংশ একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছে। তবে আইনি প্রক্রিয়ায় জামিনে বের হয়ে এসে তারা আবার ছিনতাই করছে।ছিনতাইয়ের ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। তাঁদের ভূমিকা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে।অপরাধীদের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর এক শ্রেণির সদস্যের সম্পৃক্ততা ও যোগসাজশ রয়েছে বলেও অনেকের অভিযোগ। সম্প্রতি দুটি ছিনতাইয়ের ঘটনায় কর্মকর্তাসহ পুলিশের চার সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছেন।আরো অভিযোগ রয়েছে যে রাজধানীর বেশির ভাগ থানা এলাকায় রাত ১০টার পর পুলিশ থাকে না। টহল পুলিশের গাড়িও কম দেখা যায়। এই সুযোগটা কাজে লাগায় ছিনতাইকারীরা।ছিনতাই নিয়ন্ত্রণে ডিএমপির পক্ষ থেকে গত ৭ অক্টোবর ১৯ সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। এই ফোর্সের অধীনে ঢাকার ৫০টি থানার পুলিশ এখন বিশেষ অভিযান চালাচ্ছে। র্যাবের তথ্য বলছে, ২০২২ সালে এক হাজার ১৫০টি অভিযানে দুই হাজার ৪৩৮ জন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।গত ৯ মাসে এই অভিযোগে আরো চার শতাধিক ছিনতাইকারী ও ডাকাতদলের সদস্যকে গ্রেপ্তার করে তারা।রাজধানীতে অপরাধের মাত্রা দ্রুত বাড়ছে। ফলে জনজীবনে এক ধরনের অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। রাজধানীতে এমন কিছু এলাকা আছে, যেগুলো সন্ধ্যার পর রীতিমতো অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, ছিনতাই নিয়ন্ত্রণে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের আরো তৎপর হওয়া দরকার। ছিনতাই নিয়ন্ত্রণে ডিএমপির পক্ষ থেকে গত ৭ অক্টোবর ১৯ সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। এই ফোর্সের অধীনে ঢাকার ৫০টি থানার পুলিশ এখন বিশেষ অভিযান চালাচ্ছে। আমরা আশা করব, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে, বিশেষ করে ছিনতাই প্রতিরোধে পুলিশ সব ধরনের ব্যবস্থা নেবে। ঢাকাকে নিরাপদ ও অপরাধমুক্ত করতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। দ্রুততম সময়ে রাজধানীকে অপরাধমুক্ত করা হোক।