কাবিটা নীতিমালা ২০১৭ অনুযায়ী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে প্রাক্কলন শেষ করে ১৫ ডিসেম্বর বাঁধের কাজ শুরু করতে হবে এবং ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে। ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ, সংস্কার ও মেরামতে নিয়োজিত জেলা কাবিটা মনিটরিং ও বাস্তবায়ন কমিটি সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলার ৫৪টি হাওরের ৭৪৫ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে ২০৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
এক হাজার ৭৮টি ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে। এর মধ্যে দুটি প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে। গতবার ৭৬৫টি প্রকল্পে ১৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ফসল রক্ষা বাঁধ করা হয়েছিল। এ বছর বরাদ্দ বাড়লেও কাজ শেষ করার ক্ষেত্রে সেই পুরনো চিত্রই রয়ে গেছে। রয়েছে অনিয়ম ও গড়িমসির বিস্তর অভিযোগ।
স্থানীয়দের মতে, দেরিতে কাজ শুরু করা হলে কাজের মধ্যখানে উজানের ঢল চলে আসে। তখন পুরো টাকাটাই লুটপাট করা যায়। এই লুটপাট কমাতে সরকার কাবিটা বিধিমালা ২০১৭ প্রণয়ন করলেও তা মানার ক্ষেত্রে রয়েছে সংশ্লিষ্টদের অনীহা।
তাই কোনো বছরই নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হয় না। কৃষকদের নিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি বা পিআইসি গঠনের কথা থাকলেও প্রকৃত কৃষকদের কমিটিতে নেওয়া হয় না বলেই অভিযোগ স্থানীয়দের।
অভিযোগ রয়েছে, পাউবো ও উপজেলা প্রশাসনের পছন্দের লোকেরাই কমিটিতে স্থান পান, ফলে প্রকল্পের কাজে ব্যাপক দুর্নীতি হয়। এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানেও হাওরের বাঁধ নির্মাণ নিয়ে করা লুটপাটের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।
তাই বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম ঠেকাতে হাওর আন্দোলনের নেতারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে ১০ দফা দাবি জানিয়েছেন। তাঁদের দাবিগুলো যথার্থ বিবেচনার দাবি রাখে।
হাওরাঞ্চলের লাখ লাখ কৃষকের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার কারো নেই। কেন নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ হলো না এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহি করা প্রয়োজন। পাশাপাশি অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।