‘আমরা সরেজমিনে দেখেছি চরে কৃষি উৎপাদন খরচ অনেক কম। আবার একই সাথে চরের ফসলের গুনগত মান অনেক ভালো। দুর্গম চরে শুধু ভুট্টা, কুমড়ার বাম্পার ফলনই নয়, চরে এখন কাউন, চিনাসহ অনেক অপ্রধান শস্যও হচ্ছে । যেগুলো দেশের বাইরে যাচ্ছে। চরের কৃষি খুবই সম্ভাবনাময়। দেশের চরাঞ্চল তাই আমাদের সার্বিক অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে বড় ধরনের প্রভাব রাখতে সক্ষম।
কৃষি কাজ সহ বিভিন্ন উৎপাদন মুখী কাজের সাথে যুক্ত হওয়ার কারণে চরের নারীরাও এখন অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। চরের মানুষের উন্নয়নের জন্য যে নীতি-কৌশল আছে সেখানে চরের মানুষের উন্নয়নে জাতীয় চর ফাউন্ডেশনের প্রতি একটি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গঠনের বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে।’
আজ ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ সকালে ‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক নীতি-কৌশলে চরের অবস্থান’ শীর্ষক এক রাউন্ডটেবিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য এমপি এ কথা বলেন।
রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে ন্যাশনাল চর অ্যালায়েন্সে-এর পক্ষে উন্নয়ন সমন্বয়, সুইস কন্টাক্ট এবং পল্লী উন্নয়ন একাডেমি বগুড়ার যৌথ উদ্যোগে এই রাউন্ডটেবিলের আয়োজন করা হয়। রাউন্ডটেবিলে কী নোট পেপার উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল চর অ্যালায়েন্সের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মোসাম্মৎ হামিদা বেগম, সচিব, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ। মূল প্রবন্ধে ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, বাংলাদেশ ডেল্টা প্লান ও মুজিব জলবায়ু প্রসপারিটি প্লান-এ চরাঞ্চল যথেষ্ঠ গুরুত্ব ও অগ্রাধিকার পেয়েছে। কিন্তু চরবাসী আর্থসামাজিকভাবে অন্যান্য এলাকার চেয়ে এখনও পিছিয়ে আছে।
চরের মানুষ জীবিকার জন্য এখনও প্রধানত নির্ভর করছেন অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতির ওপর।’ তিনি আরও বলেন,‘ চরাঞ্চলের অমিত সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে সকল অংশীজনকে একসঙ্গে কাজ করে যেতে হবে। একইসঙ্গে চরবাসীর চাহিদাগুলোকে সামনে আনার কাজ অব্যাহত রাখতে হবে যাতে করে বাস্তবভিত্তিক ও সময়োচিত উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা যায়।’ ন্যাশনাল চর অ্যালায়েন্সের সদস্য সচিব জাহিদ রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন পল্লী উন্নয়ন একাডেমি বগুড়ার মহাপরিচালক মো. খুরশীদ ইকবাল রেজভী। আরও বক্তব্য প্রদান করেন সুইস কন্টাক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর মুজিবুল হাসান সেজান। এ ছাড়া এমফোরসির কার্যক্রম নিয়ে উপস্থাপনা দেন এই প্রকল্পের প্রোজেক্ট ডিরেক্টর আব্দুল মজিদ পিএইচডি। রাউন্ডটেবিলে আরডিআরএস, সেভ দ্য চিলড্রেন, পিকেএসএফ, ফ্রেন্ডশীপ, অক্সফাম বাংলাদেশ, জিইউকে, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন সহ বিভিন্ন উন্নয়ন সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।