ইউএনডিপি বাংলাদেশের কান্ট্রি ইকনোমিস্ট অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমেদ বলেছেন, যেহেতু টিকাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা এক বড় চ্যালেঞ্জ, সেখানে এর অপচয় একেবারেই কাম্য নয়। তাই টিকার অপচয় রোধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ খুবই জরুরি।
শুক্রবার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক অ্যাকাউন্টের এক পোস্টে এ কথা জানান তিনি।
ড. নাজনীন বলেন, আমরা সবাই এখন জানি, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার টিকা। এই মুহূর্তে গণ টিকাদান চলছে। তারপরও জনবহুল এদেশের সকলকে টিকার আওতায় আনতে আরও অনেক টিকা লাগবে। তাই খুবই জরুরি হচ্ছে সতর্ক থাকা যেন টিকার কোনো অপচয় না হয়।
টিকা অপচয় রোধে ভারতের একটি রাজ্যের কার্যক্রম তুলে ধরে তিনি বলেন, ভারতের অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায় যে- সেখানকার কিছু কিছু রাজ্যে যেমন ঝাড়খণ্ডে টিকার অপচয় ৩৭ দশমিক ৩ শতাংশ। যেখানে বিশ্বের সব মানুষের জন্য টিকাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা এখনো অনিশ্চিত সেখানে এরূপ অপচয় খুবই দুঃখজনক। আবার ভারতের কেরালা রাজ্যে টিকার অপচয় তো হয়নি বরং এখানকার সাফল্য ১০০ ভাগের বেশি। প্রশ্ন আসতে পারে ১০০ ভাগের বেশি সাফল্য কী করে সম্ভব?
পোস্টে তিনি আরও বলেন, সাধারণভাবে টিকার একটি অ্যাম্পুল থেকে যে কয়টি টিকা দেয়া সম্ভব তার চেয়েও একটু বেশি ওষুধ থাকে, এই জন্য যে, অ্যাম্পুল থেকে সিরিঞ্জে টিকার ওষুধ ভরার সময় কিছু কমবেশি হতে পারে। দক্ষতার সাথে দেয়া গেলে একটি অ্যাম্পুলের গায়ে যা লেখা থাকে তার চেয়েও টিকা বেশি দেয়া সম্ভব। কেরালা রাজ্যের দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীরা সেটাই করেছেন। ফলে তাদেরকে দেয়া অ্যাম্পুল থেকে যেখানে ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার ৮৬০ ডোজ টিকা দেয়া সম্ভব ছিল, সেখানে তারা দিতে পেরেছেন ৭৪ লাখ ২৬ হাজার ১৬৪ শট। এই সাফল্য থেকে আমরা শিক্ষা নিতে পারি। তবে ১০০ শতাংশের ওপরে না যাওয়া গেলেও অন্তত অপচয় যেন না হয় তার চেষ্টা তো আমরা করতেই পারি।
তিনি বলেন, টিকার অপচয় রোধে এর সংরক্ষণ, পরিবহন এবং টিকাদানের যথাযথ ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা খুবই জরুরি। কোথাও অ্যাম্পুল খোলার পর কোনো কারণে টিকা দেয়া না গেলে অথবা টিকার অপচয় হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হলে সেক্ষেত্রে বিকল্প ব্যবস্থা কী হবে সেই প্রস্তুতিও থাকা দরকার বলে মনে করেন তিনি।
নাজনীন জানান, আমাদের এই গরম আবহাওয়ায় ঠান্ডা স্থানে টিকা সংরক্ষণ এবং এক স্থান থেকে আরেক স্থানে পরিবহনের সময় উপযুক্ত যানবাহন খুবই চ্যালেঞ্জিং বিষয়। উপযুক্ত পরিকল্পনার মাধ্যমে আগানো গেলে আগামী কয়েক মাস ধরে যে টিকাদান কর্মসূচি চলবে তা বেশি সংখ্যক মানুষের উপকারে আসবে। বিষয়টি জরুরি, তাই পদক্ষেপও জরুরি।