বাঙালি জাতির মুক্তির ইতিহাসে ৫ ফেব্রূয়ারি এক অবিস্মরণীয় দিন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির স্বাধীকার প্রতিষ্ঠায় ১৯৬৬ সালের এই দিনে লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধী রাজনৈতিক দলের সম্মেলনে ছয়দফা দাবি পেশ করেন। পরে সংবাদ সম্মেলন করে তা প্রকাশ করেন। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ ডাক অধিদফতর স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করেছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার শুক্রবার ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় তার সরকারি বাসভবনের দফতরে এ বিষয়ে ১০ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক ডাকটিকিট ও ১০ টাকা মূল্যমানের একটি উদ্বোধনী খাম অবমুক্ত করেন। এছাড়া ৫ টাকা মূল্যমানের একটি ডাটাকার্ড উদ্বোধন করা হয়। মন্ত্রী এ সংক্রান্ত একটি সীলমোহর ব্যবহার করেন। তিনি এ বিষেয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছেন।
বিবৃতিতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ছয়দফার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন ‘ বাঙালির স্বাধীকার প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ছয় দফা প্রণয়ন করেছিলেন। । তিনি বলেন, ১৯৬৬ সালের ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর এক সম্মেলনে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শেখ মুজিবুর রহমান “৬ দফা দাবি” পেশ করেন। পশ্চিম পাকিস্তানিরা প্রচণ্ড বাধা দেয়। বাধা পেয়ে তিনি ৫ ফেব্রুয়ারি সেখানে সংবাদ সম্মেলন করে সেটা তুলে ধরেন। পরে সাংবাদিকদের কাছে তিনি তার ছয় দফাটা দিয়ে দেন।
৬৬‘র ছয় দফা আন্দোলনে রাজপথে ছাত্রলীগের লড়াকু সৈনিক জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন,, বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য একটি অধ্যায় ।২৪ বছরের সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসের মহাকাব্যের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বেশিরভাগ সময় কারাগারে কাটাতে হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়েও বাঙালির স্বাধীকার প্রতিষ্ঠায় তাঁর আপসহীন নেতৃত্ব বিশ্বের ইতিহাসে বিরল।
ইতিহাসবিদ সৈয়দ আনোয়ার হোসেন এর একটি বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন,- ‘ন্যাপ নেতা মোজাফফর সাহেব যখন বঙ্গবন্ধুকে বলেছিলেন- এতো দফা তিনি কেন দিয়েছিলেন? তখন বঙ্গবন্ধু হেসে বলেছিলেন, ছয় দফার আদলে তো আমি এক দফার কথা বলেছি। আর সেটি হলো আমাদের স্বাধীনতা।’
ছয় দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ১৯৬৬ সালের ৭ জুন আওয়ামী লীগের ডাকে পূর্ব বাংলায় হরতাল চলাকালে পুলিশ ও ইপিআর নিরস্ত্র মানুষের ওপর গুলি চালায়। এতে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে মনু মিয়া, মুজিবুল হকসহ অনেকে শহীদ হন। ছয় দফা হয়ে ওঠে বাঙালির মুক্তির সনদ। ছয়দফার শহীদের রক্তস্নাত পথ বেয়ে ৬৮ এর ষড়যন্ত্র মামলা, ৬৯ এর গণ অভ্যূত্থান, সত্তরের নির্বাচন এবং একাত্তরের মুক্তির মহান সংগ্রামের মাধ্যমে চূড়ান্ত বিজয় সূচিত হয় বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
স্মারক ডাকটিকেট, উদ্বোধনী খাম ও ডাটাকার্ড শুক্রবার থেকে ঢাকা জিপিও’র ফিলাটেলিক ব্যুরো এবং পরে দেশের অন্যান্য জিপিও এবং প্রধান ডাকঘর থেকে সংগ্রহ করা যাবে।