English

19 C
Dhaka
মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৬, ২০২৪
- Advertisement -

ট্রাম্প হাড়ে হাড়ে বুঝুক করোনাভাইরাস কি জিনিস: তসলিমা নাসরিন

- Advertisements -

ট্রাম্পের করোনাভাইরাস একটু দেরিতেই হলো। আমি তো আশংকা করেছিলাম আরো আগেই হবে। উনি মাস্ক পরবেন না, উনি কারো সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখবেন না। হোয়াইট হাউজের রোজ গার্ডেনে সেদিন পার্টি হলো, প্রায় কেউই মাস্ক পরেননি। নির্বাচন প্রচারণায় যাচ্ছেন, তিনি তো মাস্ক পরেনই না, তাঁর কাছের লোকদেরও মাস্ক পরতে দেন না। হোয়াইট হাউজের সাংবাদিক সম্মেলনে মাস্ক পরা সাংবাদিকদের কী হেনস্থাই না করেন।
তাঁর মাস্ক বিরোধী প্রচারণার কারণেই তো গড়ে উঠেছে অ্যান্টি-মাস্কার দল, যারা মিছিল করে বেড়ায়, রাস্তায় রেস্তোরাঁয় মাস্ক না পরা লোকদের অভিনন্দন জানায় আর মাস্ক পরা লোকদের অপমান করে। ট্রাম্প তো করোনাভাইরাসকে প্রথম থেকেই গুরুত্ব দেননি। চীনা ভাইরাস বলে একে ডেকেছেন, চিকিৎসক না হয়েও মানুষকে করোনাভাইরাসের চিকিৎসা দিয়েছেন, হাইড্রক্সিক্লরোকুইন, এমনকী ডিজইনফেক্টেন্ট খেতে বলেছেন। বিশেষজ্ঞদের জানাতে হয়েছে হাড্রোক্সিক্লরোকুইন করোনাভাইরাস সারায় না, লাইজল কম্পানি তড়িঘড়ি মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছে, ভুলেও কেউ যেন ডিজইনফেক্টেন্ট লাইজল খাবার চেষ্টা না করে।
২ লক্ষ লোক মরে গেল, তারপরও ট্রাম্পের কোনও হেলদোল নেই। এত বড় ক্ষমতাবান দেশের ক্ষমতাবান প্রেসিডেন্ট, তাঁর তো উচিত ছিল গোটা বিশ্বকে মহামারীর হাত থেকে বাঁচানোর জন্য সবরকম চেষ্টা করা। মানুষকে ঘরে থাকা, মাস্ক পরা আর সামাজিক শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য অনুরোধ করা, উৎসাহ দেওয়া। তা নয়, তিনি তাঁর অজ্ঞতা, অশিক্ষা আর অহংকারের প্রদর্শনই করেছেন । ভাইরাসের অস্তিত্বকে অস্বীকার করলে তো ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়া যায় না। লড়তে গেলে এর ভয়াবহতা সম্পর্কে জানতে হবে, মানুষকে জানাতে হবে, এবং বিশেষজ্ঞদের উপদেশ মেনে সবরকম পদক্ষেপ করতে হবে।
শুধু তিনি নন, তাঁর স্ত্রী মেলানিয়া, সেনেটর মাইক লী, সেনেটর টম টিলিস, রিপাব্লিক্যান পার্টির ন্যাশনাল কমিটির চেয়ারপারসন রোনা ম্যাকডানিয়েল, হোয়াইট হাউজের তিনজন সাংবাদিক, উপদেষ্টা হোপ হিক্স, পুরোনো উপদেষ্টা কেলিয়ান কনওয়ে, নির্বাচনী প্রচারণা ম্যানেজার বিল স্টেপিয়েন সকলেই করোনায় আক্রান্ত। কে কাকে সংক্রামিত করেছে, তার কোনও হদিশ পাওয়া যাবে না। ট্রাম্প বলেছিলেন যুব সমাজ কাজে যোগ দাও, আমরা বয়স্কদের দেখভাল করব। বয়স্ক তো তিনিও, সম্ভবত ভুলেই গিয়েছিলেন। প্রচণ্ড ক্ষমতাশালী এবং প্রচণ্ড বিত্তশালীর আশেপাশে করোনা ভাইরাস উঁকি দিতেও পারবে না, এরকম একটা বিশ্বাস বোধহয় ওদের মধ্যে কাজ করে। বিলিওনিয়ার এলোন মাস্কও করোনা ভাইরাসকে মোটেও আমল দেননি।
হোয়াইট হাউজের ভেতরেই চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকে, কিন্তু হাসপাতালে যাওয়া মানে ট্রাম্পের অবস্থা যতটা ভালো তিনি বলছেন, ততটা ভালো নয়। বেঁচে যদি যান এ যাত্রা, ভালো। আমি চরম শত্রুরও মৃত্যু কামনা করি না। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন যেমন হাসপাতালে ক’দিন ভুগে ফিরেছিলেন, হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিলেন কোভিড-১৯ কী জিনিস, তেমন ট্রাম্পও ক’দিন ভুগে ফিরুন। হাড়ে হাড়ে তিনিও টের পান কোভিড-১৯ কী জিনিস। এরপর যদি তিনি ইউনিভার্সাল হেলথ কেয়ার আনায়, করোনার টিকা বানানো ত্বরান্বিত করায়, বিশ্বের সকলকে বিনামূল্যে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করায়, নিজের দম্ভ কমানোয় মন দেন ভালো। প্রচুর কাজ, করতে চাইলেই করা যায়। অবশ্য আসছে নির্বাচনে তাঁর জেতার সম্ভাবনা খুবই কম।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন