English

28 C
Dhaka
রবিবার, নভেম্বর ১৭, ২০২৪
- Advertisement -

বঙ্গমাতার ৯১তম জন্মবার্ষিকীতে যুক্তরাজ্য আ’লীগের আলোচনা: ‘তিনি শুধু স্ত্রী ছিলেন না,পথপ্রদর্শক ছিলেন’

- Advertisements -

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকী রোববার (৮ আগস্ট)। দিবসটি এবার প্রথমবারের মতো জাতীয়ভাবে পালিত হচ্ছে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

এ বছর বঙ্গমাতার জন্ম দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে—‘বঙ্গমাতা সংকটে সংগ্রামে নির্ভীক সহযাত্রী’। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক সংগঠন নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করছে।

দিনটি পালন উপলক্ষে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ৮ আগস্ট যুক্তরাজ্য সময় বেলা ১টায় এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ। সভাটি সঞ্চালন করেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক।

সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে বাংলাদেশে থেকে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেছা ইন্দিরা এমপি। তিনি বলেন, বহুমূখী প্রতিভার অধিকারী অনন্য গুণে গুনান্বিত বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতির পিতার নেপথ্য শক্তিদাতা, পরামর্শদাতা ছিলেন। তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন জাতির জনকের জীবনে। তিনি শুধু স্ত্রী ছিলেন না, পথপ্রদর্শক ছিলেন, বন্ধু ছিলেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থ থেকে উদ্ধৃতি দেন- ‘রেনু আমার পাশে না থাকলে এবং আমার সব দুঃখকষ্ট, অভাব-অনটন, বারবার কারাবরণ, ছেলে-মেয়ে নিয়ে অনিশ্চিত জীবনযাপন হাসিমুখে মেনে নিতে না পারলে আমি আজ বঙ্গবন্ধু হতে পারতাম না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামেও যুক্ত থাকতে পারতাম না। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার সময় সে আদালতে নিত্য হাজিরা দিয়েছে এবং শুধু আমাকে নয়, মামলায় অভিযুক্ত সবাইকে সাহস ও প্রেরণা জুগিয়েছে। আমি জেলে থাকলে নেপথ্যে থেকে আওয়ামী লীগের হালও ধরেছে।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে বঙ্গমাতা নেতা কর্মীদের বাসায় বাজার পাঠাতেন। কারো ভয় পরোয়া করতেন না। নেতাকর্মীদের উৎসাহ দিতেন। সংগ্রামে সংকটে নির্ভিক সাথী ছিলেন, মৃত্যুযাত্রায়ও সহযাত্রী হয়েছেন।’

উল্লেখ্য, প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা এমপির প্রস্তাবে ক শ্রেণীর জাতীয় দিবস হিসাবে পালন করা হচ্ছে এবার বঙ্গমাতার জন্মদিন।

প্রতিমন্ত্রী ফজিলতুন নেছা তাঁর বক্তব্যে চারটি প্রস্তাব পেশ করেন। সেগুলো হলো, ‘বঙ্গমাতার গৌরবময় কর্মজীবন পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভূক্ত করা হোক; গবেষণার মাধ্যমে তাঁর বর্ণাঢ্য জীবনের অজানা তথ্য নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা হোক; অবিলম্বে ১৫ আগস্টের পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে তাদের ফাঁসির রায় কার্যকর করা হোক; এ নৃশংস হত্যাকান্ডের ইন্ধনদাতা কুশিলবদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদান করা হোক’।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রো ভিসি নাসরিন আহমেদ শিলু বলেন, বঙ্গবন্ধু আজীবন রাজনীতি করেছেন, বঙ্গমাতা সেই রাজনীতির হাল ধরেছিলেন।
তিনি বলেন,বঙ্গবন্ধু যে রাজনীতি করেছেন সেই রাজনীতি বেশিরভাগই ছিল অপজিশনের রাজনীতি এবং সেই অপজিশনের রাজনীতিতে কোনো সুখ হয় না, সেখানে বাধা বিপত্তি তাকে অনেক বেশি। কিন্তু বঙ্গমাতা কখনো সেই বিষয়ে কোনো অভিযোগ বা অনুযোগ করেননি বরং বঙ্গবন্ধুকে সবসময় সাহায্য করেছেন, অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন, উৎসাহ দিয়েছেন। বঙ্গমাতাকে মামী বলে ডাকতেন উল্লেখ করে নাসরিন আহমেদ শিলু বলেন, আমি অনেক ভাগ্যবতী কারণ বঙ্গমাতার অনেক স্নেহ পেয়েছি, ভালোবাসা পেয়েছি।

ভার্চুয়াল এ আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসাবে যুক্ত হন বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়েল ট্রাস্টের ট্রাস্টি, বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, ফরিদা শেখ জেলি। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার খালাত বোন। তিনি সভায় তাঁর খালা বঙ্গমাতাকে স্মরণ করে অশ্রুসজল হয়ে বলেন, ‘বঙ্গমাতা, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা, তারা সকলেই গরীব আত্মীয়দের প্রতি সদয় ব্যবহার করেন। তারা ক্ষমতার অহংকার করেন না কখনো। বঙ্গবন্ধু খুব হাসিখুশি মানুষ ছিলেন, আমাদের বলতেন, তোদের তো মামা নাই, আমাকে কখনো খালু ডাকবি, কখনো মামা ডাকবি।’

সভায় আরেক বিশেষ অতিথি হিসাবে যুক্ত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমদ। তিনি জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানসহ জাতীয় চার নেতাকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু তাঁর স্ত্রী সম্পর্কে খুব উচ্চ ধারনা পোষণ করতেন। ড. শাম্মী বঙ্গবন্ধুর কথা তুলে ধরে জানান, বঙ্গবন্ধুর বিপদের দিনে বঙ্গমাতা ভেঙ্গে পড়তেন না। সংসারের সবকিছু সামাল দিতেন সাহসিকতার সাথে’।

সভায় আরো বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্যে আওয়ামীলীগ এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

পরে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ সংযুক্ত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

সবশেষে বঙ্গমাতা ফজিলতুন্নেছা মুজিবের রুহের মাগফিরাত কামনা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দেশ জাতির মঙ্গল কামনা করে দোয়া করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন ব্রিকলেন জামে মসজিদের খতিব মাওলানা নজরুল ইসলাম।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন