English

23 C
Dhaka
রবিবার, নভেম্বর ২৪, ২০২৪
- Advertisement -

১ মাসে ৫৭টন বর্জ্য-মাটি অপসারণ করা হয়েছে: শেখ তাপস

- Advertisements -

ওয়াসার কাছ থেকে দায়িত্বভার বুঝে নেওয়ার পর গত এক মাসে ৩টি খাল ও দুটি বক্স কালভার্ট হতে ৫৭ হাজার টন বর্জ্য-মাটি অপসারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

নিয়মিত সপ্তাহিক পরিদর্শনের অংশ হিসেবে আজ (বুধবা) সকালে শ্যামপুর খালে চলমান বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম পরিদর্শনের পর শ্যামপুরের বড়ইতলা এলাকায় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এ তথ্য জানান।

ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, আমরা দায়িত্ব নিয়েছি ত্রিশ দিনের মতো হলো। এরই মাঝে ৫৭ হাজার মেট্টিক টন বর্জ্য আমরা অপসারণ করেছি। এবং আমার ধারণা, যে অবস্থা দেখলাম, আগামী দু’মাসে তা দু্ই লাখ মেট্টিক টন ছাড়িয়ে যাবে। কিন্তু তারপরও আমরা আমাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। নিজ অর্থায়নে আমরা কার্যক্রম চালিয়ে চাচ্ছি। আমি আশাবাদী, একটি সুষ্ঠু পরিবেশ আমরা ফিরিয়ে আনতে পারব। যদিও এখন পর্যন্ত অত্যন্ত দূরূহ কাজ বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।

ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস এ সময় বলেন, ২ জানুয়ারি থেকে আমরা ব্যপক কর্মযজ্ঞ আরম্ভ করেছি। এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছি, আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই যেন সকল খাল পরিস্কার করতে পারি, পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে পারি, পানি প্রবাহের ব্যবস্থা করতে পারি। এবং পরবর্তীতে আমরা দীর্ঘ মেয়াদী যে পরিকল্পনা নিয়েছি, খালের পাশের যে জমি দখল হয়েছে সেগুলো অবমুক্ত করে সেখানে যাতায়াতের ব্যবস্থা, হেঁটে চলা, সাইকেল চালানোর ব্যবস্থা করা – – যাতে করে মানুষজন স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারে এবং সেখানে যতটা সম্ভব নান্দনিক পরিবেশ গড়ে তুলব।

ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস আরও বলেন, শ্যামপুর অনেক বড় খাল, এখানে শাখা-প্রশাখা বেশি। কিভাবে সেগুলো দখল, বদ্ধ হয়ে আছে আপনারা লক্ষ্য করেছেন। আবর্জনা-ময়লা স্তুপ হয়ে আছে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে, দীর্ঘ সময়ে এগুলো পরিস্কার করা হয়নি। পানি প্রবাহ বা পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা এখানে নেই। সামনের কর্মযজ্ঞ অত্যন্ত দুরূহ, ভয়াবহ পরিবেশ রয়েছে। এখানে একটি অংশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের খাল রয়েছে। তাদের প্রকল্প চলমান রয়েছে। সেগুলোর সাথে এগুলোর সংযোগ রয়েছে। সব মিলিয়ে অব্যবস্থাপনা ও ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে। রয়েছে। কিন্তু আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে আবেদন করছি, তাদের খালগুলো যাতে আমাদের কাছে হস্তান্তর করে। এছাড়াও, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু স্থাপনা রয়েছে – – বেড়িবাধ সংলগ্ন, সেখানে স্লুইচ গেটসহ পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রয়েছে। সেগুলোও যাতে আমাদের কাছে হস্তান্তর করে। যদিও সেগুলো অচল রয়েছে। সেগুলো আমাদের কাছে হস্তান্তর না করলে, আমরা এখনই ব্যবস্থা না নিলে, যে অভিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলেছি – – আগামী বর্ষা মৌসুমে যাতে ঢাকাবাসীকে সুফল দিতে পারি, জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত রাখতে পারি, সেটা অত্যন্ত দুষ্কর ও দুরূহ হয়ে পড়বে।

খালের দু’পাশ দখলে রাজনৈতিক মদদ থাকার কথা শোনা যায়, আপনারা কি পদক্ষেপ নেবেন – – সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, আমরা জোরালোভাবে আমাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। এরই মধ্যে মান্ডা খালের পাশে থাকা জায়গা দখলমুক্ত করেছি। খালের প্রশস্ততার জন্য সিএস জরিপে যা আছে, মানচিত্রে যা আছে, আমরা সে অনুযায়ী সর্বোচ্চ জমি অবমুক্ত করব।

এই এলাকার পানি দূষণের বড় কারণ শিল্প বর্জ্য, শিল্প বর্জ্য খালে এসে পড়ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, সবমিলিয়ে যেভাবে অপরিকল্পিতভাবে সবকিছু করা হয়েছে, তাতে কঠিন অবস্থা, দূরূহ অবস্থা বিরাজ করছে। এই এলাকার ব্যাপক কারখানা গড়ে উঠেছে। এক সময় এই এলাকাকে শিল্প এলাকা হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখানে যত্রতত্রভাবে কারখানা হয়েছে। ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট করার যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তা পরিপালন করা হয়নি। যার কারণে আপনারা লক্ষ্য করেছেন যে, খালগুলোতে শক্ত বর্জ্য বদ্ধ হয়ে গেছে, দূষিত পানি দ্বারা সেগুলো রুদ্ধ হয়ে গেছে। সুতরাং সবমিলিয়ে দূরূহ অবস্থা।

শিল্প বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে দিকনর্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, এ বিষয়ে কয়েকটি কমিটি কাজ করছে। এরই মাঝে পরিবেশ অধিদপ্তরকে বলেছি, যাতে আইনগুলো আরও কঠোরভাবে পরিপালন করা হয়। আশা করছি, পরিবেশ অধিদপ্তরও তাদের দায়িত্বগুলো সুচারুরূপে পালন করবে।

পরে ডিএসসিসি মেয়র জুরাইন কবরস্থানে চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনারা বুঝতে পারছেন যে, সময় মত কাজ শেষ না করার কারণে এখানে ঠিকমত কবর দেওয়া যাচ্ছে না। সেজন্য আমি পরিদর্শনে এসেছি। আগামী জুন মাসেই দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

এ সময় ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস আরও বলেন, প্রত্যেক সোমবারে আমরা চলমান উন্নয়ন কার্যক্রমগুলো পর্যালোচনা করে থাকি। আগামী পর্যালোচনা সভায় আমরা জুরাইন কবরস্থানের কার্যক্রম পর্যালোচনা করব। সুতরাং আমরা আশাবাদী যে, আগামী জুনের মধ্যেই জুরাইন কবরস্থানের দ্বিতীয় পর্যায়ের উন্নয়ন কার্যক্রম সমাপ্ত করবে। না হলে, আমরা সেই ঠিকাদারের কার্যাদেশ বাতিল করে বাকি কাজের জন্য হয়তোবা নতুন ঠিকাদার ব্যবস্থা করব। যাতে সময় মতো এ কার্যক্রমগুলো সম্পাদন করা হয়।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা-৪ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাবেক সংসদ সদস্য সানজিদা খানম, ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মোঃ বদরুল আমিন, প্রধান প্রকৌশলী রেজাউর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খায়রুল বাকের, মুন্সী মো. আবুল হাসেম, কাজী মোঃ বোরহান উদ্দিন ও প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মোঃ সিরাজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন