ময়মনসিংহের নান্দাইলে এক গ্রামে একই সময়ে দুই নারীর মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। আজ সোমবার সকাল ১১টায় এ ঘটনাটি ঘটে উপজেলার খামারগাঁও গাতিপাড়া গ্রামে। দুজনকেই হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। একটি লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে ও আরেকটি বিনা ময়নাতদন্তে দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই গ্রামের মো. আব্দুস ছাত্তারের স্ত্রী মোছাম্মৎ মমতাজ বেগম (৫৫) সকালের নাশতা সেরে কিছুক্ষণ পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পরিবারের লোকজন জানান, মমতাজ বেগম দীর্ঘদিন ধরে বুক ব্যথায় ভুগছিলেন। এ অবস্থায় তার চিকিৎসাও চলছিল। তাদের ধারণা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারেন। এ মৃত্যুর বিষয়ে তাদের কোনো অভিযোগ নেই। অন্যদিকে একই সময়ে গুরুতর অসুস্থ থেকে অচেতন হয়ে পড়েন একই গ্রামের আব্দুল খালেকের ধর্ম মেয়ে শিউলি আক্তার (২৫)। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
জানা যায়, ওই নারীর বাড়ি নরসিংদী জেলার মাধবী উপজেলার বগিরাতপুর গ্রামে। গত প্রায় পাঁচ বছর আগে তার বিয়ে হয়েছিল পাশের কেন্দুয়া উপজেলার গাড়াদিয়া গ্রামের মাইনুল ইসলামের ছেলে মো. তমজিদ ভূঁইয়া ওরফে তৌহিদের (৩২) সাথে। কিন্তু স্বামী ও শাশুড়ির নির্যাতনের কারণে শিউলি শ্বশুরবাড়িতে টিকতে পারেনি। একপর্যায়ে ২০১৮ সালে কর্ণফুলী রপ্তানি প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্রে স্যুইং অপারেটরের সহকারী হিসাবে চাকরি নেন। তবে বেতনের টাকা স্বামী কেড়ে নেওয়ার শিউলী সেই চাকরি ছেড়ে দিয়ে শ্বশুরবাড়ি গেলে আবারও নির্যাতনের সম্মুখীন হন। সেখান থেকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় পালিয়ে তিনি গত শনিবার ধর্ম বাবার বাড়ি নান্দাইলে চলে আসেন। এখানেই রবিবার রাতে আবারও অসুস্থ হয়ে পড়লে গ্রাম্য চিকিৎসা দেওয়া হলেও সেরে ওঠেননি। এ অবস্থায় সোমবার হাসপাতালে নেওয়া হলে তিনি মারা যান।
এ দুটি মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সর্বত্রই এক ধরনের আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে নান্দাইল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃত মমতাজ বেগমের লাশ দাফন করার অনুমতি দিলেও শিউলির মৃত্যুটি নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হলে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন নান্দাইল মডেল থানার এসআই মো. ফজিকুল ইসলাম।