ভৈরব উপজেলার কোভিড-১৯ পরিস্থিতি, টিকা কার্যক্রম অগ্রগতি ও কোভিড আইসোলেশন সেন্টারে “সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাই সিস্টেম ” চালুকরণ বিষয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রেস ব্রিফিং করেছেন ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. মোঃ খুরশীদ আলম। আজ ১ জুলাই ২০২১ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে বারোটায় কোডিভ-১৯ আইসোলেশন ট্রমা সেন্টারে জরুরী বিভাগ কক্ষ রুমে এ প্রেস ব্রিফিং করা হয়।এ সময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. রিয়াসাত আজিম, ডা. এম.এ করিম, ও ডা. ফারিয়া নাজমুন।
এ সময় প্রেস বিফ্রিংয়ে ডা. মোঃ খুরশীদ আলম বলেন, দীর্ঘদিন পর আবারো ভৈরবে করোনা সংক্রামণ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে । গত ২ সপ্তাহে বৃদ্ধির পরিমাণ বেড়েছে অনেক, তিনি বলেন, গত ১৭ মার্চ থেকে ভৈরব ট্রমা সেন্টার হাসপাতালকে কোভিড-১৯ আইসোলেশন সেন্টার হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। এরপর থেকে এখানে নিয়মিত করোনা রোগীদের চিকিৎসাসহ ভ্যাকসিন প্রদান ও করোনা পরীক্ষা চলছে নিয়মিত ভাবে গত ২২ ফেব্রুয়ারি সারা দেশের ন্যায় ভৈরবেও করোনা ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। ১৫ জুন পর্যন্ত আমরা করোনা ভ্যাকসিন দিতে পারলেও ভ্যাকসিন সঙ্কটের জন্য বন্ধ রয়েছে এ কার্যক্রম।
এ বিষয়ে তিনি আরো বলেন, এ পর্যন্ত ১২ হাজার ১৫৬ জন নিবন্ধন করেছে। এর মধ্যে ১ম ডোজ নিয়েছেন ৮ হাজার ৩১ জন, ২য় ডোজ সম্পন্ন করেছেন ৬ হাজার ৭২৯ জন। যারা ১ম ডোজ গ্রহণ করে ভ্যাকসিন সঙ্কটের জন্য ২য় ডোজে ১ হাজার ৩০২ জন এখনো বাকী রয়েছেন ।১ম ডোজে নিবন্ধন করেও ৪ হাজার ১২৫ জন ভ্যাকসিন গ্রহণ করেনি। তবে ইতিমধ্যে সরকার ভ্যাকসিন আমদানির মাধ্যমে তা সারাদেশে প্রদানের কার্যক্রম শুরু করবে বলে জানান তিনি।
ভৈরবে গত বছর ২০২০ সালে করোনা শুরু হওয়ার পর ৪ হাজার ৪৮২ স্যাম্পল সংগ্রহ করে। এর মধ্যে ৭৬৯ জন পজিটিভ আসে, সনাক্তের হার ছিল ১৭% এদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৭৬৩ জন ও মৃত্যুবরণ করে ১৫ জন। ২০২১ সালে জুন মাস পর্যন্ত ২ হাজার ৬৬০ জনের স্যাম্পল সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে ৪০৮ জন করোনা পজিটিভ সনাক্ত হয়। এদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৩৪৬ জন, মৃত্যুবরণ করেন ৬ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত রয়েছেন ৫৬ জন, এর মধ্যে ২ জন ট্রমা সেন্টারে আইসোলেশন সেন্টারে রয়েছেন। গত ২২ জুন থেকে ২৮ জুন এক সপ্তাহে আক্রান্ত হয়েছে ৪৭ জন। এখনই স্বাস্থ্যবিধি না মানলে তা ভয়াবহ রূপ নিবে ভৈরবে। ভারতের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট খুবই আক্রমণাত্মক।
তা ছড়িয়ে গেছে বাংলাদেশের আনাচে কানাচে। কোভিড-১৯ মোকাবেলায় ভৈরব ট্রমা সেন্টারে ৩০টি অক্সিজেন পোর্ট বসানো হয়েছে। সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাইয়ের মাধ্যমে মূমুর্ষূ রোগীদের এখানে চিকিৎসা দেয়া যাবে। এটি ভৈরবের জন্য একটি খুশির সংবাদ। তবে ভৈরবে করোনা ইউনিটে লোকবল কম থাকায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে পারছেন বলে জানান তিনি। এ সময় তিনি বলেন, ৩০টি পোর্টের ১২টি সিলিন্ডারের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত এ অক্সিজেন সরবরাহ করা হবে। জাইকার অর্থায়নে উপজেলা পরিষদের সহযোগিতায় ৩০টি সেন্ট্রাল অক্সিজেন পোর্ট স্থাপন করা হয়েছে। ৮টি সিলিন্ডার রিজার্ভে রাখা হয়েছে।
প্রতি সিলিন্ডারে ৯ হাজার ৮শ লিটার অক্সিজেন ধারণ ক্ষমতা রাখে। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। অনুষ্ঠানে ভৈরব স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারী ছাড়া ও ভৈরব রিপোর্টার্স ক্লাব ও ইউনিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম তাজ ভৈরবী , সাধারণ সম্পাদক মোঃ আলাল উদ্দিন, টেলিভিশন জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি আসাদুজ্জামান ফারুক ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজ আমিন, ভৈরব অনলাইন নিউজ ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম সহ ভৈরবে কর্মরত বিভিন্ন ইলেকট্রনিক , প্রিন্ট মিডিয়া ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল এর সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন ।