অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় ফেল করায় মা-বাবা বকুনি দেওয়ায় অভিমানে নবম শ্রেণি পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। শেরপুর শহরের সিংপাড়া এলাকায় আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আত্মহননকারী কানিজ ফাতেমা তাশফী (১৪) ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা এলাকার বাসিন্দা ও আবুল কাশেমের মেয়ে। সে শেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
পুলিশ, পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা এলাকার বাসিন্দা আবুল কাশেম একটি বেসরকারি কম্পানির চাকরির সুবাদে শেরপুর শহরের সিংপাড়া এলাকায় জাহাঙ্গীর হোসেনের বাসার তৃতীয় তলায় পরিবারসহ ভাড়া নিয়ে বসবাস করেন। বড় মেয়ে কানিজ ফাতেমা তাশফী শেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়াশোনা করত এবং ছোট ছেলেটিকে স্থানীয় একটি মাদরাসায় ভর্তি করেন।
তিন দিন আগে কানিজ ফাতেমা তাশফীর অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার রেজাল্ট হলে সে তিনটি বিষয়ে ফেল করায় ফলাফল বাসায় গোপন রাখে। পরে তাশফীর বাবা-মা অন্য সহপাঠীদের কাছ তার ফেল করার কথা জানতে পেরে তাকে বকুনি দেন।
আজ মঙ্গলবার সকালে বাবা আবুল কাশেম কাজের জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। মা ছোট ছেলেকে মাদরাসায় দেওয়ার জন্য সকাল সোয়া ৯টার দিকে বাড়ি থেকে বের হন। এ সুযোগে অভিমানী তাশফী ঘরের একটি কক্ষে সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে।
মা বাড়ি ফেরার পর তাশফীকে ডাকাডাকি করে না পেয়ে পরে একটি কক্ষের দরজা বন্ধ পান। তার ডাক-চিৎকারে বাড়ির অন্যা লোকজন ও প্রতিবেশীরা এসে ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে সিলিং ফ্যানের সাথে তাশফীর ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান।
সংবাদ পেয়ে সদর থানার পুলিশ এবং জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। শেরপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. হান্নান মিয়া জানান, ঘটনাটি দুঃখজনক। প্রাথমিক অনুসন্ধানে স্কুলের পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হওয়ায় মায়ের বকুনিতে অভিমানে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে লাশ পরিবারের সদস্যদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।