ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, নগর পিতা হিসেবে নয়, তিনি নগরবাসীর সেবক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি, সেবক হিসেবেই থাকতে চাই।
আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর মহাখালীতে ‘ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কভিড-১৯ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল এবং কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ও আনসারসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে নিজেদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করায় তিনি ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদেরকে ডিএনসিসি মেয়র, কাউন্সিলর, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানান।
আতিকুল ইসলাম এই তিনটি হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ও আনসারসহ সংশ্লিষ্ট সকলের মাঝে তার পক্ষ থেকে উন্নতমানের খাবারসহ শুভেচ্ছা উপহার তুলে দেন।
এ সময় ডিএনসিসি মেয়র বলেন, তিনি সবসময় ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশে ছিলেন, এখনও আছেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন। স্বাস্থ্যসেবায় সকলকে মানসিকভাবে চাঙ্গা রাখার জন্য এই উপহার তার পক্ষ থেকে একটি ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা মাত্র।
তিনি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিজেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পরিবারের সদস্যবৃন্দসহ কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পাড়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে গিয়ে ডাক্তার ও পুলিশসহ যে সকল সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারী জীবন উৎসর্গ করেছেন ডিএনসিসি মেয়র তাদেরকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন এবং সকলের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
তিনি বলেন, নগরবাসীর স্বাস্থ্য সেবার জন্যই সাত দশমিক এক সাত একর জমিতে তৈরি এক লাখ ৮০ হাজার ৫৬০ বর্গফুট আয়তনবিশিষ্ট ডিএনসিসির একটি বিপণীবিতানকে এক হাজার শয্যাবিশিষ্ট দেশের সবচেয়ে বড় ‘ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কভিড-১৯ হাসপাতাল’ এ রূপান্তরিত করা হয়েছে।
উপস্থিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের যে ১৪টি কমিউনিটি সেন্টার রয়েছে, করোনা পরিস্থিতিতে সরকার যদি এগুলোকে হাসপাতাল বানিয়ে চিকিৎসা সেবায় ব্যবহার করতে চায় তাহলে তার পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।
তিনি বলেন, করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলার পাশাপাশি ডেঙ্গু প্রতিরোধেও সকলকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। এক্ষেত্রে নগরবাসীর প্রতি তার আহ্বান, প্রতি তিন দিনে এক দিন, জমা পানি ফেলে দিন।
আতিকুল ইসলাম বলেন, নগর শুধু সরকার, মেয়র কিংবা কাউন্সিলরের একার নয়, নগরসহ দেশকে রক্ষা করার দায়িত্ব সকলের, এ বিষয়ে সকলকে সচেতন নাগরিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। সঠিকভাবে মাস্ক পরিধানের মাধ্যমে কভিড-১৯ এর সংক্রমণ কমানো এবং মানুষের জীবন বাঁচানোর লক্ষ্যে ডিএনসিসির মাস্ক পরি কর্মসূচি চলমান রয়েছে। এই কর্মসূচিকে সফল করার জন্য দেড় শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় কাজ করছে, সবাই মিলে একে সফল করতে হবে।
তিনি বলেন, প্রচলিত আইন, সরকারি নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করার কারণেই ইতোমধ্যে অনেক হোটেল, রেস্টুরেন্ট, দোকান, শপিংমল এবং কমার্শিয়াল কমপ্লেক্স বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ৬৫ লক্ষ মানুষ ঢাকা শহর ছেড়ে গেছে, তাই ঈদের পর স্বাস্থ্যবিধিসমূহ প্রতিপালনে আরো কঠোর হয়ে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হবে। নিজের পরিবার, শহর ও দেশকে সুরক্ষিত রাখতে সকলকেই সরকারি নির্দেশনাসহ স্বাস্থ্যবিধিসমূহ যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে।