চতুর্থ শিল্প বিল্পবের এই সময় বিশ্বের বড় বড় দেশেগুলোর সাথে শিল্পায়ন ও উৎপাদন প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে আধুনিক শিল্প পার্ক স্থাপনের কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে করোনা মহামারির এই সময়ও বড় বড় দেশ যেখানে হিমসিম খাচ্ছে, সেখানে আমাদের জীবন ও জীবিকা উভয় সচলের পাশাপাশি শিল্প কারখানাও চালু রয়েছে। দেশের মানুষ একেবারে কর্মহীন হয়ে পড়েনি। বর্তমান সরকার শিল্পবান্ধব বলেই বিগত বারো বছরে ধরে দেশের শিল্পোন্নয়নের জন্য কাজ করছে, আর সে কারণেই আজ দেশে নতুন নতুন শিল্প পার্ক স্থাপিত হচ্ছে। এই শিল্প পার্ক স্থাপনের মাধ্যমেই বাংলাদেশ ২০৪১ সালে উন্নত আয়ের শিল্পসমৃদ্ধ দেশের পাশাপাশি ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। সকলের ঐকান্ত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের শিল্পায়ন ও উৎপাদন বর্তমান অবস্থায় পৌঁছাছে।
গাজীপুরের শ্রীপুরে এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড (ইপিজেএল) এর এনার্জিপ্যাক ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে (ভার্চ্যুয়ালি) প্রধান অতিথি বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি আজ এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করেন এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইপিজেএল এর ব্যবস্থপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও হুমায়ুন রশিদ। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইপিজেএল এর চেয়ারম্যান ইঞ্জিঃ রবিউল আলম এবং পরিচালক এনামুল হক চৌধুরী। এছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইপিজএল এর পরিচালক নুরুল আক্তার, ও রেজওয়ানুল কবির, স্বতন্ত্র পরিচালক মোহাম্মদ নুরুল আমিন ও মিকাইল শিপার।
শিল্পমন্ত্রী আরো বলেন, করোনা মহামারীর মধ্যেও বাংলাদেশ গতবছর জিডিপি ৫.২৪ শতাংশ ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। বর্তমানে করোনা মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। জাতীয় অর্থনীতি সচল রাখতে লকডাউনের মধ্যেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় শিল্প কারখানা চালু রাখা হয়েছে, যাতে করে মানুষ কর্মহীন না হয়ে পড়ে। তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশীয় একটি প্রতিষ্ঠান ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক নির্মাণ করেছ, একটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এই এনার্জিপ্যাক শিল্প পার্কটি অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে।
এমডি ও সিউও হুমায়ুন রশিদ বলেন, এনার্জিপ্যাক ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে এবং অর্থনীতির বিকাশ সাধন করবে। এ পার্কের মাধ্যমে বিদ্যুৎ ও পরিবহন খাতের পাশাপাশি দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নেও ব্যাপক অবদান রাখবে।
উল্লেখ, অত্যাধুনিক ‘এনার্জিপ্যাক ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক’-এ রয়েছে দেড় মেগাওয়াট পর্যন্ত লোড পরীক্ষা ও গ্ল্যাড ব্র্যান্ডের বার্ষিক ৫শ’ জেনারেটর তৈরি করতে সক্ষম এমন একটি বিশ্বমানের প্ল্যান্ট। যা ভবিষ্যতে ৩ মেগাওয়াট পর্যন্ত লোড পরীক্ষা করতে পারবে এবং প্ল্যান্টটি ১ হাজার গ্ল্যাড জেনারেটর তৈরি করতে পারবে। তাছাড়া, এনার্জিপ্যাক বিশ্বমানের ইলেকট্রিক ডিবি বক্স নির্মাণ এবং বাজারজাতকরণের পরিকল্পনা করছে। পার্কটিতে জেএসি (JAC) কমার্শিয়াল ভেহিকেলগুলোর জন্যও একটি অ্যাসেম্বলিং প্ল্যান্ট রয়েছে, যেখানে প্রতি বছর ১২০০ গাড়ি অ্যাসেম্বল করা যায়। এই সক্ষমতা ১৫শ’তে উন্নীত করা হবে এবং একটি বাস অ্যাসেম্বলিং প্ল্যান্ট ও বৈদ্যুতিক বাহন তৈরির পরিকল্পনাও করছে। এখানে ১৮,০০০ মেট্রিক টন বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন প্রিফেব্রিকেটেড ষ্টীল বিডিং তৈরির একটি প্ল্যান্ট রয়েছে। এছাড়াও, এনার্জিপ্যাকের প্রি-ইঞ্জিনিয়ারিং লো-কস্ট হাউজ, নাট-বল্টু, ওয়্যার মেশ এবং প্রোফাইল শিট তৈরি এবং সেগুলোর বিপণনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।