নিজের প্রতীক নৌকাকে নূহ (আ.)-এর নৌকার সঙ্গে তুলনা করেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী।
শনিবার (১ জানুয়ারি) সিদ্ধিগঞ্জের বটতলা এলাকায় কাউন্সিলর প্রার্থী শাহজালাল বাদলের বাড়ির সামনে আয়োজিত এক নির্বাচনী সভায় এ কথা বলেন তিনি।
এ সময় পুরো সড়ক বন্ধ করে সভা করা হয়। সড়কটি দিয়ে ঢাকা-ডেমরা, রূপগঞ্জের গাউছিয়া যাওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়। সড়কটি বন্ধ করে সভা করায় পুরো এলাকাজুড়ে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।
আইভী বলেন, ধার্মিক ভাইদের বলতে চাই, নৌকার জন্য আপনারা আমাকে ভোট দেবেন না—এটা হতেই পারে না। এই নৌকা বিজয়ের, আওয়ামী লীগের এবং একাত্তরের। সেভাবেই এ নৌকা নূহ (আ.)-এর নৌকা। নূহ নবীর নৌকায় কিন্তু হাতি মানুষ ঘোড়া সব উঠেছিল। নৌকা কিন্তু ডোবেনি, পার হয়ে গিয়েছিল। আজকে যারা বলে নৌকা হাতি উঠিয়ে ডুবিয়ে দেবে, কোনো দিনও সম্ভব না। কারণ এই নৌকা নূহ (আ.)-এর নৌকা। আপনাদের কাছে দাবি, এই নৌকায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন।
সাবেক মেয়র বলেন, আপনাদের কাছে ভোট চাইতে এসেছি। ২০১১ সালে এসেছিলাম আপনারা আমাকে ভোট দিয়েছিলেন। ২০১৬ সালে শেখ হাসিনার নৌকা প্রতীক নিয়ে এসেছিলাম। আপনারা আমাকে সেই প্রতীকে এই এলাকা থেকে ভোট দিয়েছিলেন। আমি এই ওয়ার্ডে ১০০ কেটি টাকার কাজ করেছি। এটা আপনাদের ট্যাক্সের টাকায়। আপনারা ট্যাক্স দেন পাঁচ-ছয় কোটি টাকা। বাকি টাকা প্রধানমন্ত্রী আমাকে দিয়েছেন। কারণ নৌকায় ভোট দেওয়ার ফলে প্রধানমন্ত্রীরও আপনাদের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকে। যে কাজগুলো আপনারা চান, সেগুলো করে দেওয়ার জন্য তিনি তার মেয়রকে টাকা দেয় বলেই কাজ করতে পারি।
তিনি আরও বলেন, আমি সবসময় দল-মত নির্বিশেষে কাজ করছি। কখনো আওয়ামী লীগ বা বিএনপি দেখিনি। সকলের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছি, সকলের কাজ করে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তাই আমি মনে করি আপনাদের কাছে আমার দাবি আছে ভোট চাওয়ার, আপনারা যে দলই করেন না কেন।
নৌকার প্রার্থী বলেন, ‘এটা স্থানীয় সরকার নির্বাচন। আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিলে এমন না যে দেশে পরিবর্তন হয়ে যাবে। আজকে যারা হাতি মার্কায় নির্বাচন করছে, তাদের মাঝে রব উঠেছে সরকারকে ধাক্কা দেওয়ার। কোনো দিনও সম্ভব নয় এভাবে সরকারকে ধাক্কা দেওয়া। এটা শেখ হাসিনার স্থানীয় সরকার নির্বাচন, জাতীয় নির্বাচন না যে আপনারা মার্কা দেখে ভোট দেবেন। তাই আপনাদের কাছে অনুরোধ, নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন।
তিনি বলেন, আপনাদের দাবি এই এলাকায় বড় খেলার মাঠ নেই। আপনাদের কাউন্সিলর আমাকে বহুবার বলেছে এখানে বড় কবরস্থান নে। আমরা চেষ্টা করব জায়গা একোয়ার করে মাঠ, হাসপাতাল আর একটা কবরস্থান করার জন্য। আমাদের নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের চারটা হসপিটাল আছে। আমরা ৮নং ওয়ার্ডে জায়গা পেয়েছি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যেখানে জায়গা নেই সেখানে জায়গা একোয়ার করে কাজ করতে হবে। আপনারা চিন্তা করবেন না, আমি সব করে দেব।
তিনি আরও বলেন, জালকুড়িতেই ৩০০ কোটি টাকা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে ময়লা থেকে বিদ্যুৎ হবে। সেখানে অনেক সুন্দর করে কাজ হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শিগগিরই এটা উদ্বোধন করবেন। আমরা শীতলক্ষ্যা ব্রিজ করছি, নদীর এপার-ওপার যোগাযোগ করার জন্য। এই টাকার প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন ৫০০ কোটি। খাল খনন করা হয়েছে, বাকি যেগুলো আছে সেগুলোও খনন করা হবে। আমি কখনো দলবাজি করিনি, দলের ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করেছি।