অগ্নিকাণ্ডে নিহত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করতে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করছেন সিআইডির সদস্যরা। সেখানে তিন মাসের বাচ্চা নিয়ে স্বামীর খোঁজে হাজির হন রেশমা বেগম।
বিএম ডিপোতে বিস্ফোরণের পর থেকে আর খোঁজ মিলছে না তাঁর স্বামী মো. শাহজাহানের।
শুধু রেশমা বেগমই নন। ডিএনএ নমুনা দিতে এসেছেন আরও অনেকে। সেই ভিড়ে ছিলেন ইস্ফাহান সুলতানাও। স্বামীর খোঁজে তিনিও এসেছেন সাত মাসের শিশুকন্যাকে নিয়ে।
সোমবার (৬ জুন) সকাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে ডিএনএ নমুনা দিতে ভিড় করছেন নিখোঁজ স্বজনের পরিবার। দুপুর সাড়ে বারোটা পর্যন্ত ১২ জনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেছেন সিআইডির সদস্যরা।
তিন মাসের শিশুকে নিয়ে আসা রেশমা বেগমের সঙ্গে শ্বশুর বাড়ির কেউ না এলেও এসেছেন বাবা মোহাম্মদ লিটন। তিনি পেশায় সিএনজি চালক। আট বছর আগে মেয়েকে বিয়ে দেন কাভার্ড ভ্যান চালক মো. শাহজাহানের সঙ্গে।
শাহজাহানের ঘরে দুই ছেলে। তার মধ্যে একজনের বয়স মাত্রই ৩ মাস। আরেকজন ৬ বছর। শাহজাহানের পরিবার থেকে কেউ খোঁজ নিতে না এলেও জামাইয়ের খোঁজে এসেছেন শ্বশুর মোহাম্মদ লিটন।
লিটন বলেন, অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে আমি জামাইকে ফোন দেই। সে প্রথমে নিরাপদ দূরত্বে গাড়ি রেখে আসে। পরে আবার ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। সেখানে গিয়ে বন্ধুর খোঁজ করে আর আগুনের ছবি তুলতে থাকে। আমি তাকে অনেক অনুরোধ করেছি বের হয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু সে বের হয়নি। একটু পরেই বিকট শব্দ হয়। এর পর থেকে তার কোনো খোঁজ নেই।
লিটন আরও বলেন, শাহজাহানের যখন এক মাস বয়স তখনই তার মা মারা যান। পরে বাবা অন্য জায়গায় গিয়ে নতুন সংসার শুরু করে। পরিবারে তার তেমন কেউ নেই। নিজের সংসার নিয়ে দিনাতিপাত করতে হিমশিম খেতে হয়। সেখানে এখন মেয়ে আর দুই নাতিকে নিয়ে কিভাবে থাকবো, কই যাবো ভেবে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ছে।