শফিক আহমেদ সাজীব: চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো মাথা না কেটে এন্ডোস্কোপিক মেশিনের মাধ্যমে ব্রেইন টিউমার সার্জারী করলেন ডাক্তার ইসমাঈল।
চট্টগ্রামে সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতাল গুলোর মধ্যে এই প্রথম পার্কভিউ হসপিটালে এন্ডোস্কোপিক ব্রেইন টিউমার সার্জারি সম্পন্ন হল।
৫৫ বছর বয়স্ক খায়ের আহমেদ বেশ কিছুদিন ধরে মাথা ব্যথা এবং চোখে ঝাপসা দেখার সমস্যায় ভুগছিলেন। ব্রেইনের এমআরআই পরীক্ষার মাধ্যমে উনার রোগ নির্ণয় হয় পিটুইটারি ম্যাক্রোএডেনোমা, যা একধরনের জটিল ব্রেইন টিউমার।
এ ধরনের টিউমারের সার্জারী মাথার খুলি কেটে মাইক্রোস্কোপের মাধ্যমে করা যায় এবং মাথা না কেটে এন্ডোস্কোপিক মেশিনের মাধ্যমে নাক দিয়েও করা যায়।
সারাবিশ্বে এন্ডোস্কোপিক পিটুইটারি টিউমার সার্জারীর প্রচলন দীর্ঘদিন আগে হলেও চট্টগ্রামে এই প্রথমবারের মতো এই অপারেশন সম্পন্ন হয় গতকাল কাতালগঞ্জস্থ পার্কভিউ হাসপাতালে।
এ অপারেশন টিমের নেতৃত্ব দেন ঢাকা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সেস্ হাসপাতালের কনসালটেন্ট নিউরোসার্জন ডাক্তার মু. ইসমাঈল হোসেন।
এ অপারেশনে টীমে আরো উপস্থিত ছিলেন নিউরোসার্জন ডাক্তার ফরহাদ আহমেদ, নিউরোসার্জন ডাক্তার মঈনুদ্দীন জাহিদ, ডাক্তার তৌহিদুর রেজা, ডাক্তার রেজা, ডাক্তার খুরশীদ আনোয়ার, ডাঃ আসিফ।
এ অপারেশনে এনেস্থেশিওলজিস্ট হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ এনেস্থেশিয়া বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা: নুরুল আজিম ও ডাঃ ওয়াদুদ।
এ প্রসঙ্গে পার্কভিউ হসপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডাক্তার এটিএম রেজাউল করিম বলেন,”চিকিৎসা ব্যবস্থা দিন দিন উন্নত এবং আধুনিক হচ্ছে। পার্কভিউ হাসপাতাল উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় সকল যন্ত্রপাতির সমন্বয় করে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা রোগীদের কাছে পৌঁছে দিতে সর্বদা চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমরা পার্কভিউ হাসপাতালের পক্ষ থেকে জটিল এবং আধুনিক অপারেশন সম্পন্ন করার জন্য ডাক্তার ইসমাঈল ও তার টিমকে ধন্যবাদ জানাই। এরই মাধ্যমে চট্টগ্রামে যুগান্তকারী চিকিৎসা ব্যবস্থার দ্বার উন্মোচন হলো।
এ অপারেশন সম্পর্কে জানতে চাইলে নিউরোসার্জন ডাক্তার ইসমাঈল বলেন, “আমি চট্টগ্রামের সন্তান। এ এলাকার মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে নিউরো সার্জারীর উন্নত ও আধুনিক সেবার দ্বার উন্মোচন করার জন্য আমি সার্বক্ষণিক চেষ্টা করে যাচ্ছি। তারই ধারাবাহিকতায় এ প্রথম চট্টগ্রামে মাথা না কেটে এন্ডোস্কোপি মেশিনের মাধ্যমে ব্রেইন টিউমারের অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন করলাম।এখন থেকে বৃহত্তর চট্টগ্রামের মানুষকে নিউরোসার্জারির অত্যাধুনিক অপারেশনের জন্য ঢাকা এবং বিদেশে আর যেতে হবে না। এতে রোগীরা আর্থিকভাবে সাশ্রয়ী হবেন এবং দেশের অর্থ দেশেই থাকবে এবং দেশের অর্থনীতির চাকা আরো বেগবান হবে।