চট্টগ্রাম জেলার সাবেক সিভিল সার্জন মুক্তিযোদ্ধা ডা. সরফরাজ খান চৌধুরী বাবুলের দিন শুরু রোগীর ফোনে। আর ঘড়িতে ১০টা বাজতেই তিনি হাজির চেম্বারে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতেও প্রতিদিন চেম্বার করার পাশাপাশি টেলিমেডিসিন সেবাও দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। করোনাকালে তিন হাজারের বেশি রোগী দেখছেন তিনি।
তাদের কেউ ফি দিতে পেরেছেন, কেউ পারেননি। কিন্তু কারও চিকিৎসাসেবা দিতে কোনো বৈষম্য করেননি তিনি। প্রতিদিন একাধিকবার মোবাইল ফোন চিকিৎসাধীন করোনা রোগীদের। কভিডকালীন ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, আর্থিক অসচ্ছল রোগীদের দিচ্ছেন সাবান, মাস্ক, স্যানিটাইজার। কর্মহীন, অসহায় ও দরিদ্রদের মাঝে নিয়মিত বিতরণ করছেন ত্রাণসামগ্রী। বীর মুক্তিযোদ্ধা এই চিকিৎসকের ভাষ্য- অসুস্থ মানুষ বাঁচতে চায়, তাদের বেঁচে থাকার ইচ্ছের সারথি হতে চান তিনি।
ডা. সরফরাজ খান বাবুল বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম। দেশের জন্য, মানুষের জন্য মুক্তিযোদ্ধারা সবসময় এগিয়ে আসেন। মুক্তিযুদ্ধের পর অনেক বছর কেটে গেছে যখন যে পদেই ছিলাম চেষ্টা করেছি ভালো কিছু করতে।
করোনায় সবকিছু যখন বন্ধ তখন চিকিৎসকের প্রয়োজন। লকডাউন শুরু হলেও প্রতিদিন চেম্বার করছি এই কারণে। তিনি বলেন, অনেক ঘাট শ্রমিক, জেলে, ভিক্ষুক আছেন যারা টাকার জন্য চিকিৎসা করাতে পারছেন না। তাদের নিয়মিত চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি। কারণ মানুষ বাঁচতে চায়। তাদের বেঁচে থাকার ইচ্ছের সারথি হতে চাই।
চট্টগ্রামের বর্তমান সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘করোনায় চট্টগ্রামের অনেক নামি-দামি চিকিৎসক ভয়ে রোগী দেখা বন্ধ রেখেছেন সেখানে সাবেক সিভিল সার্জন মহোদয় রোগী দেখছেন প্রতিদিন। চেম্বার করছেন, রোগীদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করাছেন। বিভিন্ন সংগঠনের হয়ে তিনি করোনাকালীন ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প করছেন। কভিড পরিস্থিতিতে তিনি সাহস জুগিয়ে যাচ্ছেন সবাইকে।
স্বাচিপের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সমন্বয়ক ডা. আ ন ম মিনহাজুর রহমান বলেন, সরফরাজ খান বাবুল ভাই হলেন দেশপ্রেমিক মানুষ। ৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে মহিউদ্দিন চৌধুরী যখন মুসলিম হলের সামনে ডায়রিয়া রোগীদের জন্য একটি মোবাইল হসপিটাল করেছিলেন, সেখানে ওআরএস বানানোর প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। ডা. সরফরাজ ভাই সেটার নেতৃত্ব দিয়েছেন। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে উনার দেশপ্রেম অনন্য।