ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডবের ঘটনায় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম প্রতিবাদ করেছে জেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা। আজ মঙ্গলবার প্রেস ক্লাবের কর্মসূচি থেকে কার্যালয় ও সাংবাদিকদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে হেফাজতে ইসলামের সংবাদ বর্জনের পাশাপাশি জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারের (এসপি) প্রত্যাহার দাবি করা হয়। এ ছাড়াও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জুড়ে চলা তাণ্ডবের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিকরা।
আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাব চত্ত্বর থেকে সাংবাদিকরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এরপর মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক (টি. এ. রোড) প্রদক্ষিণ করে আশিক প্লাজা পর্যন্ত গিয়ে পুনরায় প্রেস ক্লাব চত্ত্বরে এসে শেষ হয়। এরপর সেখানে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি পীযূষ কান্তি আচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিম বিজন, টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মনজুরুল আলম, প্রেস ক্লাবের সহসভাপতি ইব্রাহীম খান সাদাত, সাবেক সভাপতি সৈয়দ মিজানুর রেজা, খ. আ. ম. রশীদুল ইসলাম ও মোহাম্মদ আরজু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আ. ফ. ম. কাউসার এমরান ও দীপক চৌধুরী বাপ্পি, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবদুন নূর, কবি জয়দুল হোসেন, এমদাদুল হক, সৈয়দ মো. আকরাম, নিয়াজ মুহাম্মদ খান বিটু, প্রেস ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম শাহজাদা, তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক মজিবুর রহমান খান, সাবেক সহসভাপতি মফিজুর রহমান লিমন, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহারুল ইসলাম মোল্লা, টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহির রায়হান, সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম আহবায়ক বিশ্বজিৎ পাল, নবীনগর প্রেস ক্লাবের সভাপতি জালাল উদ্দিন মনির, আশুগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, কসবা উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি খ. ম. হারুনুর রশীদ ঢালী, সরাইল প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব খান বাবুল ও এশিয়ান টিভির স্টাফ রিপোর্টার হাবিবুর রহমান পারভেজ প্রমুখ। প্রতিবাদ সমাবেশ সঞ্চালনা করেন প্রেস ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মো. মনির হোসেন।
এ সময় বক্তারা প্রেস ক্লাব ভবন ও সাংবাদিকদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘অতীতের কোনো আন্দোলন-সংগ্রামের সময় প্রেসক্লাবে হামলার ঘটনা ঘটেনি। প্রেস ক্লাবের সভাপতির ওপর পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালানো হয়। যারা প্রেস ক্লাব ও সাংবাদিকদের ওপর হামলার সাথে জড়িত, তাঁদেরকে খুঁজে বের করার দায়িত্ব হেফাজতে ইসলামের নেতৃবৃন্দকেই নিতে হবে।’ পাশাপাশি ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরজুড়ে চালানো তাণ্ডবের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানান বক্তারা।
উল্লেখ্য, গত ২৬ মার্চ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাদরাসাছাত্র ও হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের হামলায় প্রেস ক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামি, একুশে টিভির জেলা প্রতিনিধি মীর মো. শাহীন, ডেইলি স্টারের জেলা প্রতিনিধি মাসুক হৃদয়, আমাদের নতুন সময়ের জেলা প্রতিনিধি আবুল হাসনাত মো. রাফি, ডেইলি ট্রাইব্যুনালের জেলা প্রতিনিধি ইফতেয়ার উদ্দিন রিফাত, এটিএন নিউজের ক্যামেরাপারসন সুমন রায়, লাখো কণ্ঠের মো. বাহাদুর ইসলাম। এ ছাড়াও হরতালের দিন প্রেসক্লাবে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়।