যানযটের কারণে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে ১৫ মিনিট দেরি। এ কারণে হলে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি শান্তাকে। হাত-পা ধরেও মন গলাতে পারেনি কেন্দ্র সচিবের। অবশেষে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ না নিয়েই বাড়িতে ফিরতে হয় তাকে।
এমন ঘটনা ঘটেছে মঙ্গলবার নোয়াখালী পৌরসভার নরোত্তমপুর বাসা থেকে পরীক্ষার কেন্দ্রে। ভুক্তভোগী সামিয়া সুলতানা শান্তা চৌমুহনী পৌরসভার গনিপুর গালর্স হাইস্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী। তাকে বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে পরিবার ও স্কুল কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, পরীক্ষা দিতে না পেরে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছে শান্তা। গত দুদিন ধরে না খেয়ে কান্না করে যাচ্ছে সে। ট্রাফিক জ্যামে ১৫ মিনিট দেরিতে পরীক্ষার কেন্দ্রে আসায় ওই ছাত্রীকে পরীক্ষা দিতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্র সচিব আবদুল মান্নানের বিরুদ্ধে। তিনি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তবে কেন্দ্র সচিব এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
পরীক্ষার্থীর মা রাবেয়া সুলতানা অভিযোগ করে বলেন, পাঁচদিন ধরে শান্তা অসুস্থ। সোমবার তাকে বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। ১৪ নভেম্বর অসুস্থ অবস্থায় পদার্থ বিজ্ঞান পরীক্ষা দিয়েছে। তবে মঙ্গলবার যানজট থাকার কারণে পরীক্ষার কেন্দ্রে পৌঁছতে ১৫ মিনিট দেরি হয়। কেন্দ্রে ঢোকার পর কেন্দ্র সচিব আবদুল মন্নান তাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করতে থাকে। এভাবে আরো ১৫ মিনিট নষ্ট হয়। পরে শান্তাকে পরীক্ষায় অংশ নিতে দেওয়া হবে না বলে জানান।
তিনি আরো বলেন, ‘আমি ও আমার মেয়ে কেন্দ্র সচিবের কাছে অনেক অনুনয়-বিনয় করলেও কাজ হয়নি। এক পর্যায়ে আমার মেয়ে কান্না করে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এ সময় অন্য শিক্ষকরা পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ করলেও কেন্দ্র সচিব নাকোচ করেন।’
গনিপুর গালর্স হাইস্কুলের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি গোলাম ফারুক ভূঁইয়া বলেন, ‘দীর্ঘ যানজটে পড়ে ছাত্রীটি কেন্দ্রে পৌঁছাতে ১৫-২০ মিনিট দেরি হয়েছে। কিন্তু তার তো পরীক্ষা দেওয়ার অধিকার রয়েছে। কিন্তু প্রধান শিক্ষককে আমি অনেক অনুরোধ করলেও তিনি আমার কথা রাখেননি।’
কেন্দ্র সচিব আবদুল মান্নান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘মেয়েটি ৪০ মিনিট পর কেন্দ্রে প্রবেশ করেছে। তাই তাকে পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়নি।’
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিষয়টি টেলিফোনে আমাকে অবগত করেছেন। ওই ছাত্রীটি নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে কেন্দ্রে প্রবেশ করেছে। তাই তাকে পরীক্ষায় অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।’
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন