শফিক আহমেদ সাজীব: চট্টগ্রামের জঙ্গল সলিমপুরে সরকারি স্থাপনা নির্মাণের জন্য প্রস্তাবিত স্থান পরিদর্শন করেছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।
২৪ জুলাই ২০২২ রোববার বিকাল ৫টার দিকে জঙ্গল সলিমপুরের খাসজমিতে ইকো পার্ক, স্পোর্টস ভিলেজ, চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা নির্মাণের জন্য প্রস্তাবিত স্থান পরিদর্শন করেন তিনি।
ভূমিমন্ত্রী এ সময় বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর সুযোগ্য কন্যা, সফল প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে ও নির্দেশনায় বাংলাদেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না। জঙ্গল সলিমপুরে সকল ছিন্নমূলবাসী যেখানেই আছে সেখানেই থাকবে। যারা পাহাড়ের কিনারায় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে তাদের সরিয়ে পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
তিনি আরও বলেন, নামে-বেনামে কেউ জায়গা দখল-বিক্রি করতে পারবে না। ভূমিদস্যুদের কবল থেকে ছিন্নমূলদের রক্ষার ব্যবস্থা করা হবে।
ভূমিদস্যুদের কবল থেকে সরকারি খাস জমি উদ্ধার করে সরকারের গৃহীত মহাপরিকল্পনাগুলো অতি শীঘ্রই বাস্তবায়ন করা হবে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (স্থানীয় সরকার) বদিউল আলম, নাজমুল আহসান প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, পরিবেশ সমুন্নত রেখে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের জন্য সীতাকুণ্ড উপজেলার জঙ্গল ছলিমপুর একটি আদর্শ স্থান।
চট্টগ্রাম শহর থেকে এর দূরত্ব মাত্র ১০ কিলোমিটার। এখানে ৫টি মৌজায় মোট খাস জমির পরিমাণ প্রায় ২ হাজার ৮০০ একর।
ভূমিদস্যুরা নব্বই দশক থেকে এখানে পাহাড় কেটে পরিবেশ বিপন্ন করে জঙ্গল ছলিমপুরকে অবৈধ বসবাসকারী অপরাধীদের স্বর্গরাজ্য হিসেবে গড়ে তুলেছে।
অবৈধভাবে পাহাড় কেটে তৈরি করা ঝুকিপূর্ণ প্লটগুলো দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অপকর্ম করে আসা সন্ত্রাসীদের কাছেবিক্রি করা হচ্ছে ।
শতাংশ প্রতি ২০ হাজার টাকা থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
জঙ্গল ছলিমপুরের খাস পাহাড়গুলো নির্বিচারে কেটে বিক্রি করার ফলে সন্ত্রাসীরা একদিকে কোটি কোটি আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে অন্যদিকে প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিনষ্ট হচ্ছে। গত তিন চার বছরে পাহাড় ধসে এখানে ৫ জন মারা গেছেন। এই পর্যন্ত জঙ্গল ছলিমপুরে নির্বিচারে পাহাড় কাটা হয়েছে প্রায় ৪০০ একর। গত ১ জুলাই তথ্যমন্ত্রী ও মেয়রকে নিয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান প্রথমবারের মতো জঙ্গল সলিমপুর পরিদর্শন করে একটা মহাপরিকল্পনার কথা জানান। এরই প্রেক্ষিতে গত ১৫ জুলাই জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের উপ পরিচালকের নেতৃত্বে একটি টিম ওই স্থান পরিদর্শনে গেলে তাদের সামনেই গাড়ি থেকে নামিয়ে স্থানীয় মেম্বারকে মারধর করা হয়। এতে নেতৃত্ব দেন আলী নগরের সম্রাট খ্যাত ইয়াসীন। পরে ১৬ জুলাই সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা দায়ের করা হয়। পরে ১৮ জুলাই তাকে সহ ৫ জনকে কোতোয়ালী থানা এলাকা গ্রেফতার করে পুলিশ।
পরে নির্বিচারে পাহাড় কেটে সরকারি জমি দখলের অপরাধে ২০ জুলাই পরিবেশ আইনে মামলা দায়ের করা হয়। সর্বশেষ গত ২২ জুলাই জেলা প্রশাসন ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৩টি স্ক্যাভেটর, ৬টি ড্রাম ট্রাক ও ১টি ট্রাক জব্দ করে।