English

23 C
Dhaka
শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪
- Advertisement -

চিরকুমার ‘বিষ পাগলা’র ঘরে আলমারিভর্তি টাকা!

- Advertisements -

কুমিল্লার তিতাস উপজেলার গাজীপুর গ্রামের সদ্যঃপ্রয়াত এক ব্যক্তির ঘরে প্রায় আড়াই কোটি টাকা পাওয়া গেছে। ওই ব্যক্তির নাম আমির হোসেন মুন্সী ওরফে ‘বিষ পাগলা’। তবে স্থানীয়রা তাঁকে ‘বিষা পাগলা’ বলেই ডাকতেন। ওই গ্রামের মাজারবাড়ির বাসিন্দা ‘বিষ পাগলা’র ঘরে নগদ টাকা ছাড়াও পাওয়া গেছে বিদেশি মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার।

চিরকুমার ‘বিষ পাগলা’ একজন আধ্যাত্মিক সাধক ছিলেন বলে দাবি করেছে তাঁর পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের দাবি, ভক্তরাই তাঁকে এসব টাকা ও স্বর্ণালংকার উপহার দিয়েছেন।

বুধবার তিতাস থানা পুলিশ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে ওই ব্যক্তির ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া টাকা গণনা করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ৮ জুলাই উপজেলার গাজীপুর গ্রামের মৃত নসু মুন্সীর ছেলে মো. আমির হোসেন মুন্সী ওরফে বিষ পাগলা ৫৫ বছর বয়সে স্বাভাবিকভাবে মারা যান। অবিবাহিত জীবনে বিষ পাগলা একাই একটি ঘরে বসবাস করে আসছিলেন। ঈদের কারণে তাৎক্ষণিক তার বসবাসের ঘরে কেউ প্রবেশ না করলেও ঈদের পর গতকাল মঙ্গলবার তার আত্মীয়-স্বজন ঘরটি পরিষ্কার করতে যান। ঘর পরিষ্কারের একপর্যায়ে আলমারি খুললে তাতে সাজানো টাকার বান্ডেল দেখতে পান স্বজনরা। বিষয়টি তাঁরা তাৎক্ষণিক এলাকার গণ্যমান্য ও জনপ্রতিনিধিদের জানান। পরে থানা পুলিশের সহযোগিতায় মঙ্গলবার রাতে ঘরটি তালাবদ্ধ করে রাখা হয়।

এদিকে, বুধবার সকাল ১১টায় বিষ পাগলার বাড়িতে তিতাস থানা পুলিশের একটি টিম উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি মুন্সি মুজিবুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিনুল ইসলাম সোহেল শিকদার, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ফরহাদ আহমেদ ফকির, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফরিদা ইয়াসমিন, কুমিল্লা (উত্তর) জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার হোসেন বাবু, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সাইফুল আলম মুরাদ, বলরামপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. নূর নবী, বিষ পাগলার বোন মুর্শিদা আক্তার, বড় ভাই আউয়াদ মুন্সিসহ গাজীপুর গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতিতে তাৎক্ষণিক একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঘরের তালা খুলে নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। প্রায় ৪০ মিনিট মেশিনের মাধ্যমে টাকা গণনা করে পুনরায় টাকাসহ ঘর তালাবদ্ধ করে দেওয়া হয়। টাকা গণনার সময় ঘরে সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।

টাকা গণনা শেষে স্থানীয় বলরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নূরনবী জানান, বিষ পাগলার ঘর থেকে দুই কোটি ৪৫ লাখ নগদ টাকাসহ প্রায় তিন লাখ টাকার বিভিন্ন দেশের মুদ্রা ও স্বর্ণাংকার পাওয়া গেছে। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উদ্ধার হওয়া টাকা যৌথ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ব্যাংকে রাখা হবে। এরপর তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।

তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুধীন চন্দ্র দাস বলেন, বিষয়টি স্থানীয় লোকজন আমাদের জানালে আমরা তাৎক্ষণিক গ্রামের লোকজনের সহযোগিতায় মঙ্গলবার রাতে ঘরটি তালাবদ্ধ করে দিই। বুধবার স্থানীয় লোকদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক টাকা গণনা করা হয়। ঘর থেকে দুই কোটি ৪৫ লাখ টাকাসহ প্রায় তিন লাখ টাকার বিদেশি মুদ্রা ও স্বর্ণাংকার পাওয়া যায়। যা বিষ পাগলার কাছের আত্মীয়-স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, প্রয়াত বিষ পাগলারা দুই বোন ও তিন ভাই ছিল। এদের মধ্যে বর্তমানে একজন বোন মুর্শিদা বেগম ও দুই ভাই আউলাদ মুন্সি ও জামাল মুন্সি বেঁচে আছেন।

আউলাদ মুন্সি বলেন, আমার ভাই একজন আধ্যাত্মিক সাধক ছিলেন। তাঁর কাছে অনেক দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসত। ভক্তরা তাকে ভালোবেসে টাকা-পয়সা ও বিভিন্ন জিনিসপত্র উপহার দিয়ে যেতেন। এগুলো সে জমিয়ে রাখত; কিন্তু মৃত্যুর পর তার ঘরে এত টাকা পাওয়া যাবে আমরা কল্পনাও করতে পারিনি।

আউলাদ মুন্সি আরো বলেন, জীবিত থাকতে আমার ভাইয়ের স্বপ্ন ছিল রাস্তার পাশে একটি মসজিদ করার। কিন্তু সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন হওয়ার আগেই তিনি দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন। এখন আমরা ভাইয়ের রেখে যাওয়া টাকা দিয়ে একটি মসজিদ, মাদরাসা ও একটি মাজার তৈরি করতে চাই।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন