কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরে চতুর্থবারের মতো ভিড়েছে কয়লাবোঝাই ‘এম ভি জিসিএল পারাডিপ’ নামের একটি জাহাজ। জাহাজটিতে ৬৩ হাজার ৭৭০ মেট্রিক টন কয়লা রয়েছে।
আজ বুধবার সকাল ৯টায় গভীর সমুদ্র থেকে পানামার পতাকাবাহী জাহাজটি পাইলটিং করে জেটিতে নিয়ে আসেন চট্টগ্রাম বন্দরের পাইলটরা। এরপর থেকেই কয়লা খালাস শুরু হয়।
মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের প্রকল্প ব্যবস্থাপক ক্যাপ্টেন আতাউল হাকিম সিদ্দিকী বলেন, ৬৩ হাজার ৭৭০ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে একটি জাহাজ আজ সকালে মাতারবাড়ীতে পৌঁছেছে। কয়লা নিয়ে আসা এটি চতুর্থতম জাহাজ। এ নিয়ে গেল দেড় মাসে প্রায় আড়াই লাখ মেট্রিক টন কয়লা আসল।
জাহাজটি লম্বায় ২২৯ দশমিক ৯৯ মিটার। জাহাজের ড্রাফট বা পানির নিচের অংশে রয়েছে সাড়ে ১২ মিটার। জাহাজটি কয়েক দিন আগে ইন্দোনেশিয়ার তারাহান বন্দর থেকে কয়লা নিয়ে মাতারবাড়ীর উদ্দেশে রওনা হয়েছিল। আজ সেটি মাতারবাড়ীতে পৌঁছায়। এর আগে আসা তিনটি জাহাজের চেয়ে এটি বড়। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে জাহাজটি থেকে কনভেয়ার বেল্টের মাধ্যমে মাত্র চার দিনে সম্পূর্ণ কয়লা খালাস করা যাবে।
এর আগে মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরুর পর প্রথম ৬৩ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে গত ২৫ এপ্রিল জেটিতে ভেড়ে ‘এমভি অউসো মারো’। জাহাজটি লম্বায় ২২৯ মিটার। জাহাজের ড্রাফট বা পানির নিচের অংশে রয়েছে সাড়ে ১২ মিটার। এ ছাড়া গত ১৯ মে ৬৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে ২২৯ মিটার লম্বা এবং ১২ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটের একটি জাহাজ বন্দরে নোঙর করে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক বলেন, কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে তৈরি হয়েছে দেশের সবচেয়ে গভীর কৃত্রিম নৌপথ। একের পর এক বড় জাহাজ ভেড়ানোর মাধ্যমে এই নৌপথের সুবিধা পেতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। নতুন উৎপাদনে যাওয়া মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে দুটি জেটির একটিতে কয়লা খালাস করা হয়। ৩০০ মিটার লম্বা এ জেটিতেই বড় জাহাজগুলো ভিড়ছে। তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের অন্য জেটিটি ১১০ মিটারের। তেল খালাসের জন্য জেটিটি নির্মাণ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, জাপানের সহযোগিতায় মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন এই বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে উঠেছে। বর্তমানে এর পরীক্ষামূলক উৎপাদন চলছে। আগামী দু-এক মাসের মধ্যে এই কেন্দ্রের বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে।