চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগের পাইলাইন হিসেবে খ্যাত পোর্ট কানেক্টিং রোডের সংস্কার ও উন্নয়ন কাজে দৃশ্যমান অগ্রগতি হওয়ায় গভীর সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, তিন বছর ধরে সড়কটির বেহাল অবস্থার কারণে জন-দুর্ভোগ চরম পর্যায়ে পৌঁছে ছিলো।
প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর এই সড়কটির সংস্কার ও উন্নয়ন কাজটি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সম্পন্ন করার জন্য বিশেষ গুরুত্ব দিই। প্রতিদিনই বিরামহীন ভাবে এই সড়কটির কাজ চলমান রয়েছে। এখন পর্যন্ত কাজের যে-টুকু অগ্রগতি হয়েছে তাতে অনেকাংশ জনদুর্ভোগ লাঘব হয়েছে। একই ভাবে নগরীর অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্থ সড়কগুলোকেও নির্বিঘ্নে যান ও জনচলাচল উপযোগী করে তোলার জন্য প্যাচওর্য়াক চলমান থাকবে।
তিনি আজ ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০ দুপুরে পোর্ট কানেক্টিং রোডে সংস্কার ও নির্মাণ কাজ পরিদর্শনকালে সমবেত এলাকাবাসীর উদ্দেশ্যে একথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, যে গতিতে কাজ চলছে তাতে নভেম্বর মাসের মধ্যেই সড়কটির সংস্কার ও উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হওয়ার আশা করা যায়। বৃষ্টিজনিত কারণে পূর্নগতিতে কাজ করার ক্ষেত্রে সাময়িক বিরতি না থাকলে অক্টোবর মাসেই কাজটি সম্পন্ন হয়ে যেতো। তিনি প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের উদ্দেশ্যে বলেন, সড়কটির স্থায়িত্ব ও ভারী পরিবহন চলাচলের সক্ষমতা বজায় এবং গুনগত মান রক্ষায় কারিগরী বিষয়গুলোর যথাযথ প্রয়োগ হলে আগের মত সড়ক বেহাল দশায় পর্যবসিত হবার কোন আশঙ্কা থাকবে না। আমি এই বিষয়টির উপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিই। অতীতে এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হয়নি বলেই সড়ক উন্নয়নের কাজ শেষ হওয়ার পর অল্প সময়ের ব্যবধানে এসব সড়ক বেহাল অবস্থায় পৌঁছে গেছে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী ও ঠিকাদারদের দায়িত্বহীনতার চিত্র প্রকট হয়ে ওঠে।
প্রশাসক পোর্ট কানেক্টিং রোড পরিদর্শনের সময় শতশত উৎফুল্ল মানুষের ভীড় জমে ওঠে।
এ সময় তারা হাত নাড়িয়ে চসিক প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজনকে শুভেচ্ছা সিক্ত করেন এবং অনেকেই মন্তব্য করেন যে, দীর্ঘ তিন বছর ধরে আমরা কাঁদামাটির জন্য রাস্তাটি দেখতেই পায়নি। এখন রাস্তাটি দেখতে পাচ্ছি যা আমাদের কাছে স্বপ্নের মতো। এতদিন ভাঙ্গাচোরা খানা-খন্দে ভরা সড়কে কাদা পানি মেখে চললেও এখন পীচঢালা পাকা-পোক্ত সড়ক দেখতে পেয়ে গ্লানি ও হতাশা দুর হলো।
প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন পোর্ট কানেক্টিং রোডে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী-শ্রমিকদেরকে ঘরে তৈরী চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী বিনি চালের পিঠা-পুলি খাইয়ে আপ্যায়িত করে উৎসাহ সৃষ্টি করেন। তিনি শ্রমিকদের আন্তরিকতার সাথে কাজ করার আহবান জানান।
এছাড়া সরাইপাড়া এলাকাবাসীরাও নিজ উদ্যোগে সড়কে কর্মরতদের দুপুরে আপ্যায়িত করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চসিকের উপ সহকারী প্রকৌশলী সুমন সেন, সড়ক তদারককারী মো. নুর ইসলাম, ঠিকাদারদের পক্ষ থেকে ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ ওসমান ও ইঞ্জিনিয়ার মো. জহির উদ্দিন।
এছাড়া কলকা সিএনজি ফিলিং স্টেশন থেকে সরাইপাড়া স্কুল, মেহেদী বাগ, শেখ মুজিব রোড, দেওয়ানহাট, মেরিনার্স রোড, সিডিএ এভিনিউ, বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার, এয়ারপোর্ট রোড, কাস্টম মোড়, ঈশান মহাজন রোডে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্যাচওয়ার্ক আজ দিনভর চলমান ছিলো।
নগরবাসীর চলাচলের সুবিধার্থে প্রতিনিয়ত প্যাচওয়ার্ক কাজ চলমান রাখা হয়। পোর্ট কানেক্টিং রোডের চলমান উন্নয়ন কাজের সুবিধার্থে এক পাশ বন্ধ রেখে কাজ চলছে এবং এক পাশ খোলা রাখা হয়েছে। যে অংশটি খোলা সেই অংশে গাড়ি চলাচল ও ভারী বৃষ্টির কারণে সমাপ্ত সংস্কার কাজ ক্ষতিগ্রস্থ হলেও সেগুলোতে তাৎক্ষণিক প্যাচওয়ার্ক বিদ্যমান রাখা হয়। নগরীর যে কোন সড়কে দৃশ্যমান ক্ষয়ক্ষতি ও সমস্যা থাকলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অথবা যে কোন ভাবে প্রশাসককে অবগত করা হলে অকুস্থলে প্যাচওয়াক টিম জনভোগান্তি লাঘবে কাজ করবে।
এরপর চসিক প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন আরেফিন নগর টিজি পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে চসিক প্রশাসক টিজির প্রবেশমূখের রাস্তাটিকে আরো হাইজেনিক করার নির্দেশনা দেন।
এছাড়া কর্পোরেশনের জায়গা যারা দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে দখল করে রেখেছেন তাদেরকে কাছ থেকে জায়াগুলো অবৈধ দখল মুক্ত করা হবে বলে ঘোষণা দেন। এছাড়া মাদকের বিস্তার রোধে পুলিশ প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী কর্মপন্থা গ্রহণ করা হবে বলে এলাকাবাসীকে জানান চসিক প্রশাসক।
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন