সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্স এন্ড ইনভেশন ফেয়ার (আই এস আই এফ) এ বিজয়ী হয়েছে চট্টগ্রামের আনাস আহমেদ ও তালহা জুবায়ের। প্রাক বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থিদের জন্য জন্য আয়োজিত বিজ্ঞান ও উদ্ভাবনভিত্তিক এই প্রতিযোগিতাটি পৃথিবীর সবচেয়ে নামকরা বিজ্ঞান প্রদর্শনির অন্যতম। এতে এবার চুড়ান্তভাবে নির্বাচিত ৩৩০ দলের মধ্যে চার ধাপের প্রতিযোগিতা শেষে দ্বিতীয় রানার আপ হয়েছে বাংলাদেশ দল। আর বাংলাদেশ দলের দুই সদস্য ছিল আনাস ও জুবায়ের। দুইজনই চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল থেকে এসএসসি সমাপ্ত করে সম্প্রতি ভর্তি হয়েছে নটরডেম কলেজে।
পদার্থবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, প্রকৌশল, প্রযুক্তি ও পরিবেশবিজ্ঞান – এই কয়েকটি কাটেগরিতে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয় এই প্রতিযোগিতা। এতে বিশ্বে বিরাজমান কোন সমস্যা সমাধানের উপায় বের করা কিংবা প্রচলিত পদ্ধতির চেয়ে অধিকতর কার্যকর কোন পদ্ধতিতে কাজ করার উপায় বের করতে হয়। ব্যাসিলাস সাবটিলিস নামের একটি ব্যাকটেরিয়া তথা অণুজীবের উপস্থিতিতে মরিচের বৃদ্ধি বেড়ে যায় এবং তার পরিপক্বতাও দ্রুততর হয়- দির্ঘ ছয় মাস ধরে নিজেদের বাসার বারান্দায় ও ছাদে এই পরীক্ষাটি চালায় আনাস ও তালহা। মাটিতে বসবাসকারী ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে ব্যাসিলাস সাবটিলিস ব্যাকটেরিয়া অন্যতম।
এ প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া কিভাবে বীজের অঙ্কুরোদগম সময়, অঙ্কুরোদগম হার এবং চারার বৃদ্ধিকে প্রভাবিত করে সেটাই ছিল প্রজেক্টের মূল বিষয়। পরীক্ষনটি করা হয়েছিল মরিচ বীজের ও বীজ অঙ্কুরিত হয়ে উৎপন্ন চারার উপর এবং সাধারণভাবে বৃদ্ধির সাথে ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতিতে বৃদ্ধির তুলনা করে দেখা যায় এ ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতিতে চারার বৃদ্ধি খুব দ্রুত হয়। অঙ্কুরোদগমের সময় ও হ্রাস পায় এবং অঙ্কুরোদগম হার বৃদ্ধি পায়। এই কাজের ভিডিও উপস্থাপন, পরবির্তিতে তার উপর পোস্টার উপস্থাপন, বিভিন্ন ছবির মাধ্যমে উপস্থাপনা, এর উপর দির্ঘ নিবন্ধ লেখা এবং সবশেষে আন্ত্ররজাতিক খ্যাতিমান বিজ্ঞানী ও গবেষকদের সামনে উপস্থাপন করতে হয় নিজেদের কাজ। সবকটি ধাপ পেরিয়ে ফাইনালে পুরষ্কার পায় বাংলাদেশের আনাস ও তালহা। করোনা মহামারীর কারনে এবার পুরো প্রতিযোগিতাটিই অনুষ্ঠিত হয়েছে অনলাইনে। এতে চ্যাম্পিয়ন হয় যুক্তরাষ্ট্র ও নেদারল্যান্ডের প্রতিযোগীরা এবং প্রথম রানার আপ হয় চীন। আনাস চান্দগাও নিবাসি মো. আনোয়ার হোসাইন ও নাসরিন খানম এর সন্তান। ইতিপুর্বে সে অর্জন করেছে জাতীয় ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের চ্যাম্পিয়ন পদক ও জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডে রানার আপ পুরষ্কার। মো. ছিদ্দিকুর রহমান ও তাসলিমা বেগমের সন্তান তালহা ইতিপুর্বে বিজয়ী হয়েছে বায়োলজি অলিম্পিয়াডে। তারা দুজনই ভবিষ্যতে বিজ্ঞানী হতে চায় আর পড়তে যেতে চায় হার্ভার্ড বা ক্যামব্রিজের মত প্রতিষ্ঠানে তাদের স্বপ্নকে ছুঁতে।
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন