বর্তমান একাদশ জাতীয় সংসদের প্রয়াত সংসদ সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, বীরমুক্তিযোদ্ধা, ড. মাসুদা এম, রশীদ চৌধুরী’র আজ ১ম মৃত্যুবার্ষিকী।
ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট,শিক্ষক,চিত্রশিল্পী,নারী উদ্যোগতা,রাজনীতিবিদ সহ বহুগুনের অধিকারিণী (ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার) এর সংরক্ষিত আসনের এমপি ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির দায়ীত্বপ্রাপ্ত ছিলেন প্রফেসর মাসুদা।
তিনি একমাত্র নারী ব্যবসায়ী নেত্রী যিনি সর্বোচ্চ ভোটে এফবিসিসিআই পরিচালক নির্বাচিত হন। সর্বোচ্চ ভোটে একাধারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ বার সিনেট সদস্য, ৩ বার সিন্ডিকেট সদস্য ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য হন। তিনি সার্ক চেম্বার অব কমার্স এর ভাইস প্রেসিডেন্ট, ইউনেস্কো ক্লাব অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট, ওআইসি টাস্কফোর্সে বাংলাদেশের প্রতিনিধি, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও প্রেসিডিয়াম সদস্য, এসএমই ফাউন্ডেশন এর সহ-সভাপতি, বিসিক এবং ইপিবি’র পরিচালক, নাসিবের সহ-সভাপতি, বাংলা ক্রাফ্ট এর সভাপতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রোভার স্কাউট লিডার, আন্তর্জাতিক এশিয়ান আর্ট বিএনএল এর সমন্বয়কারী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টুরিস্ট সোসাইটির প্রধান উপদেষ্টা ও মডারেটর,পরিকল্পনা কমিশন ও মাইডাস এর কনসাল্ট্যান্ট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং ক্লাবের উপদেষ্টা,খন্ডকালীন প্রফেসর- বুয়েট, চারুকলা অনুষদ এবং পিপলস্ ইউনির্সিটির ডিন পদে দায়িত্ব পালন করেন বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারীনি এই মহীয়সী নারী এবং অর্জন করেন ৭৬ টি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। ১৯৮৬ সালে ফিলিপাইনস থেকে ১৫, ০০০ নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টির কারণে সে দেশের সর্বোচ্চ পদকে ভূষিত হন।
সমাজ বিজ্ঞান, নারী উদ্যোক্তা, রাজনীতি, চিত্র কলার উপরে লিখেছেন তিনি ৭৪টি বই।
তাঁর পিতা মরহুম আবুল মনসুর পাকিস্তানের শীর্ষ ব্যবসায়ী, মাতা মৌসুফা মনসুর বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা সংস্থার সভানেত্রী ও চট্টগ্রাম বাওয়া স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা। নানা খাঁন বাহাদুর আবুল মজিদ জিয়াউস সামস্ ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান পার্লামেন্টের শিক্ষামন্ত্রী। দাদা খাঁন বাহাদুর টি আহম্মেদ উপমহাদেশের প্রথম মুসলিম ডিপিআই ও ঢাকা ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা। পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের বিরোধী দলের নেতা একেএম ফজলুল কবির চৌধুরী’র জ্যেষ্ঠ পুত্রবধূ তিনি। তাঁর স্বামী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট এবিএম ফজলে রশীদ চৌধুরী। তিনি পুত্র ব্যারিস্টার সানজীদ রশীদ চৌধুরী এবং কন্যা সানজানার জননী। রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী তাঁর দেবর।
দেশে নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টি, শিক্ষা’র প্রসার, সোনারগাঁও লোকশিল্প জাদুঘর কে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি, চট্টগ্রামের মুসলিম ইনস্টিটিউট এর পুনঃ নির্মাণে তাঁর ভূমিকা অনস্বীকার্য।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের বিএফএ ছাত্রী থাকাকালীন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের নেতৃত্বে তিনি সরাসরি মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
গতবছর এইদিনে, ঢাকার বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মরহুমার আত্মার মাগফিরাতের জন্য ঢাকা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের বাসভবনে এবং রাউজানের পারিবারিক বাসভবনে পবিত্র কোরআনখানি, মিলাদ মাহফিল এবং দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে।