শফিক আহমেদ সাজীব: মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করছেন কোদালা চা-শ্রমিকেরা। ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকে গত ৯ আগস্ট থেকে কর্মবিরতীসহ এই আন্দোলন করছেন বাগানটির প্রায় ১২০০ শ্রমিক। এছাড়া আসন্ন দূর্গা পূজার আগে ২১ মাসের বকেয়া মজুরী পরিষোধ করারও দাবী জানানো হয়।
বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে কোদালা চা-বাগানের শ্রমিকেরা মিছিল বের করেন। এসময় “ভাত কাপড়ের আন্দোলন, চলবেই চলবে”, রুটি-রুজির আন্দোলন, চলবেই চলবে”- এসব স্লোগান মুখে আন্দোলনরত শ্রমিকদের মিছিলে মুখরিত হয়ে উঠে পুরো চা বাগান এলাকা। চা বাগানের বটতলা থেকে শুরু করে মিছিলটি চা বাগান সড়ক পথে বাগানের ১নং গেইট হয়ে ফ্যাক্টরির পাতাঘরের সামনে গিয়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন চা শ্রমিকদের পঞ্চায়েত কমিটির সাবেক সভাপতি শিবলু কুমার দাশ। চা শ্রমিক নেতা রিটন দাশ মেম্বারের সঞ্চালনায় আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামীলীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক কাউছার নূর লিটন, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি বদিউল আলম মাস্টার, সাধারণ সম্পাদক মো. ইসহাক সওদাগর, সহ সভাপতি জগদীশ রায়, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আবদুল জব্বার, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ এরশাদ, চা শ্রমিক নেতা আশু দাশ, শোভা আকুড়ে, জয়া আকুড়ে, রতন সর্দার প্রমুখ।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া চা-শ্রমিক শোভা আকুড়ে বলেন, ‘মজুরি, চিকিৎসা, শিক্ষা, বাসস্থানসহ বিভিন্ন দিকে আমাদের পিছিয়ে রাখা হয়েছে। দ্রব্যমূল্যের বাড়তি দামের মাঝে ১২০ টাকা বেতন দিয়ে কিছুই হয় না।’
আরেক চা-শ্রমিক রতন সর্দার বলেন, ‘আন্দোলন-ধর্মঘটের কারণে মজুরি বন্ধ হয়ে আছে। ঘরে খাবার নেই। এরপরও দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।’
সংহতি প্রকাশ করা আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ এই বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন বলে জানান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চা-বাগানের এক কর্মকর্তা বলেন, “দশ দিন ধরে চা উৎপাদন বন্ধ হয়ে আছে। শ্রমিকদের এমন ধর্মঘটে বাগানের যেসব নতুন পাতা গজিয়েছে সেগুলো মান হারাবে।”
সমাবেশে অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন প্রসাদ দাশ, শুকুল মেম্বার, মিনুয়ারা বেগম মেম্বার, সুজীত দাশ, তাপস আকুড়ে, বিপ্লব রায়, সঞ্জিত সিং, রুবেল চক্রবর্তী, জুয়েল তুরি, কিরত বাগদি, ডাবলু দাশ, ধনঞ্জয় রায়, অমিত বাউরী, সম্পদ বাউরী প্রমুখ।
উল্লেখ্য চট্টগ্রাম, সিলেটসহ সারা দেশের ২৪১টি বাগানের চা-শ্রমিকেরা ধর্মঘট পালন করছেন। গত শনিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেছেন তাঁরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শ্রমিকনেতারা।