ইশারায় তার ওপর ঘটে যাওয়া নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে শুধু কাঁদছেন।
ঘটনাটি গত রবিবারের। এ ঘটনার পর থেকে রিপন মিয়া গাঢাকা দেন। এ ব্যাপারে বেবী বেগমের বোন মঞ্জুয়ারা বেগম বাদী হয়ে গাইবান্ধা সদর থানায় মামলা করার পর আজ মঙ্গলবার ভোরে স্বামী রিপন মিয়াকে পলাশবাড়ী উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
অভিযোগ ও পুলিশ সূত্র জানায়, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম রাজীবপুর গ্রামের মৃত মজিবর রহমানের মেয়ে বেবী বেগমের সঙ্গে সদর উপজেলার পূর্ব কোমরনই কুঠিপাড়া গ্রামের নাজিম উদ্দিনের ছেলে রিপন মিয়ার ছয় বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের দু-তিন বছর পর থেকেই যৌতুকের জন্য প্রায়ই বেবীকে মারধর করতেন রিপন। বাধ্য হয়ে এর আগেও বেবীর পরিবারের পক্ষ থেকে প্রায় দেড় লাখ টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু এতে কোনো কাজ হয়নি, নির্যাতন বন্ধ হয়নি।
আজ মঙ্গলবার হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, হাসপাতালের শয্যায় যন্ত্রণায় বারবার উঠে বসছিলেন বেবী। তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি হাত-পা ছুড়ে, মাথা নেড়ে পরিস্থিতি বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু তাঁর মুখ থেকে গোঙানির আওয়াজ ছাড়া অন্য কিছু শোনা যাচ্ছিল না।বেবী বেগমের বোন মঞ্জুআরা বেগম (৪৬) জানান, আবারও গত কয়েক দিন ধরে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন রিপন। রবিবার (১৫ অক্টোবর) সকালে টাকা না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে বেবীকে বেধম মারধর করেন তিনি।
মারধরে বেবী জ্ঞান হারিয়ে ফেললে ধারালো ছুরি দিয়ে তার জিভ কেটে দেন হিংস্র রিপন। তাঁর আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে পালিয়ে যান রিপন।বেবী বেগমের মা রাবেয়া বেগম (৭০) জানান, কয়েক দিন আগেও মেয়ের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তার আরেক মেয়ে রিপনকে ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন। কিন্তু তাতেও তিনি থামেননি। এ ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক বিচার চান তিনি।সেখানে উপস্থিত বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের জেলা সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর মাহাফুজা খানম মিতা ও সাধারণ সম্পাদক রিকতু প্রসাদ বলেন, ‘বর্বর এই নির্যাতনের ঘটনা কোনো শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ মেনে নেবে না। বেবীর শারীরিক ও আইনি লড়াইয়ের দিকে লক্ষ রাখা হচ্ছে।’গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মো. মাসুদ রানা বলেন, ‘এ ঘটনায় গৃহবধূ বেবী বেগমের বোন মঞ্জুআরা বেগম বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা করার পর পুলিশ মঙ্গলবার রিপনকে গ্রেপ্তার করে। তাকে দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ওই গৃহবধূকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’