English

29 C
Dhaka
শনিবার, নভেম্বর ১৬, ২০২৪
- Advertisement -

যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে নির্যাতনের পর মাথা ন্যাড়া করলো পাষণ্ড স্বামী

- Advertisements -

কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বারাইপুরে যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে নির্যাতন করে মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছে পাষণ্ড স্বামী। এ ঘটনায় নির্যাতিত স্ত্রী বাদী হয়ে স্বামী ও দেবরের বিরুদ্ধে লালমাই থানায় মামলা দায়ের করেছেন। প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় ৩রা জুলাই ভোরে লালমাই থানা পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে পাষণ্ড স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে।

নির্যাতিত নারী, পুলিশ ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, অনুমান ১৮/১৯ বছর পূর্বে উপজেলার ভুলইন দক্ষিণ ইউনিয়নের বারাইপুর গ্রামের আবুল বাশারের ছেলে মোঃ হাসান (৪০) এর সাথে ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী সামাজিকভাবে বিয়ে হয় ওই নারীর। তাদের সংসারে একজন পুত্র সন্তান (১১) ও একজন কন্যা সন্তান (৫) রয়েছে। বিয়ের পর শ্বশুর পরিবার থেকে একাধিকবার আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন হাছান। তিনি পেশায় একজন পোল্ট্রি ব্যবসায়ী। সম্প্রতি তিনি ব্যবসার জন্য শ্বশুর বাড়ী থেকে ৫ লক্ষ টাকা এনে দিতে স্ত্রীকে চাপ সৃষ্টি করেন।

যৌতুকের টাকা এনে দিতে অসম্মতি জানানোর কারনে গত ১৯ জুন বিকালে স্বামী হাসান ও দেবর হোসাইন ক্ষুব্ধ হয়ে ওই গৃহবধূকে টয়লেট পরিষ্কারে ব্যবহৃত ব্রাশ দিয়ে শারীরিক নির্যাতন শেষে মাথার চুল ন্যাড়া করে দেন। পরবর্তীতে ২৪ জুন বিকালে ২য় দফায় নির্যাতন করায় বিষয়টি জানাজানি হয়।

গত ৩০ জুন দুপুরে মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভুলইন দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একরামুল হক নিজ কার্যালয়ে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে বিষয়টি সমাধান করতে সালিশ বৈঠকের আয়োজন করেন। হাসান সংসার করতে না চাওয়ায় সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ২ লক্ষ টাকা নিয়ে স্ত্রী স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে দিতে হবে। কিন্তু নির্যাতন ও মাথা ন্যাড়া করার বিচার না পাওয়ায় ওই নারী সেই সিদ্ধান্ত মানেননি।

গত ২ জুলাই বিকালে মা কে সাথে নিয়ে নির্যাতিত গৃহবধু লালমাই থানার নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্কে কর্মরত এএসআই হ্লাম্রাচিং মারমা’র সহায়তা চান। তখনই বিষয়টি লালমাই থানার অফিসার ইনচার্জের নজরে আসে। তিনি নির্যাতিত নারীর মুখ থেকে বিস্তারিত শুনেন এবং প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পেয়ে ভিকটিমের লিখিত অভিযোগ ২০০০ সনের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১ (গ) ৩০ ধারায় এফআইআর ( নং ০৫, তাং ০৩/০৭/২১ইং) হিসেবে গ্রহন করেন। শনিবার ভোরে লালমাই থানাধীন ভুশ্চি বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে পাষন্ড স্বামীকে নিজ গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করেন।

নির্যাতিত গৃহবধূ বলেন, ভুলইন দক্ষিণের চেয়ারম্যান সালিশ বৈঠক করে ২ লক্ষ টাকায় ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। কিন্তু শারীরিক নির্যাতন ও মাথা ন্যাড়া করার বিচার না পাওয়ায় আমি সেই সিদ্ধান্ত মানিনি। তাই থানায় মামলা করেছি। পাষন্ড স্বামীকে গ্রেপ্তার করায় তিনি পুলিশের প্রশংসা করেন।

ভুলইন দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান একরামুল হক বলেন, উভয়পক্ষের মানিত সালিশদারদের উপস্থিতিতে বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছি। স্বামী স্ত্রীকে ২ লক্ষ টাকা পরিশোধ করবে এবং স্ত্রী স্বামীকে ডিভোর্স করবে। উভয়পক্ষ রায়ে সন্তোষ্ট হয়েছিল। স্বামী রায় মেনে ৪০ হাজার টাকা আমার কাছে জমাও রেখেছে। বাকি টাকা আগস্টে পরিশোধ করার কথা। কিন্তু স্ত্রী কেন মামলা করলো বিষয়টা জানি না।

লালমাই থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আইয়ুব বলেন, গৃহবধূকে নির্যাতন ও মাথা ন্যাড়া করার বর্বর ঘটনায় পাষণ্ড স্বামীকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন