রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে প্রথমে সখ্যতা তৈরি করতেন আলোচিত-সমালোচিত রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীর, এরপর ব্ল্যাকমেইল করে তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করতেন তিনি। শনিবার (৩১ জুলাই) দুপুরে উত্তরা র্যাব সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, এসব ব্যক্তির কাছ থেকে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় করা হয়েছে সে বিষয়ে আমরা তথ্য পেয়েছি। এ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যদি মনে করে এ মামলাটির তদন্ত র্যাব করবে তাহলে যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমরা আবেদন করবো। তবে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের ওপর ভিত্তি করে হবে। হেলেনা জাহাঙ্গীরের স্বামী ১৯৯০ সাল থেকে গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে অন্যদের সঙ্গে পার্টনারশিপের মাধ্যমে ব্যবসা শুরু করে এখন পর্যন্ত পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের মালিক তিনি।
তিনি আরও বলেন, ২০১২ সাল থেকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জয়যাত্রা ফাউন্ডেশনের নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করতেন। জয়যাত্রা ফাউন্ডেশনের নামে হেলেনা জাহাঙ্গীর দেশ-বিদেশ থেকে অর্থ সংগ্রহ করতেন। দেশি-বিদেশি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের টার্গেট করে প্রথমে সখ্য তৈরি করে পরবর্তীতে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় করতেন হেলেনা।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, হেলেনা সুনির্দিষ্ট একজন ব্যক্তির জন্য থেমে থাকেননি। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য যাকেই প্রয়োজন হয়েছে তাকে তিনি ঘায়েল করেছেন। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলেছেন এবং সেটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছেন শুধু উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য। আমাদের মামলার কারণ এটাই। তিনি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন, যা তাদের বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে, জনগণের মধ্যেও বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) রাতে গুলশানের ৩৬ নম্বর রোডের ৫ নম্বর বাসা থেকে প্রায় ৪ ঘণ্টা অভিযান শেষে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে আটক করে র্যাব। সিলগালা করে দেওয়া হয় জয়যাত্রা টেলিভিশনের অফিসও। পরদিন গুলশান থানায় দুটি ও পল্লবী থানায় একটি মামলা করে র্যাব।