এতে গুরুতর আহত হয় রাব্বি নামের ওই কলেজছাত্র।
কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য শুরু হওয়ার প্রথম দিকে ২০১৫ সালের ২৭ মে উত্তরার সাত নম্বর সেক্টরে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে অনিক নামের এক কিশোর খুন হয়। এর আগে ২০১৮ সালের ৬ জানুয়ারি উত্তরায় ডিসকো বয়েজ ও নাইন স্টার গ্রুপের অন্তর্দ্বন্দ্বে খুন হয় নবম শ্রেণির ছাত্র আদনান কবির।
র্যাবের ভাষ্য, তারা জিরোজিরো গ্রুপ, বাবা গ্রুপ, জাউরা গ্রুপ, ডি কম্পানি ও জাহাঙ্গীর গ্রুপসহ বিভিন্ন গ্রুপের সদস্য। টাকার বিনিময়ে তারা মারামারি, দখলবাজি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত। গত শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরায় র্যাব-১-এর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ওই শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোস্তাক আহমেদ। তিনি বলেন, ‘এই কিশোর অপরাধীদের লালন-পালনকারী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারেও আমরা তৎপর রয়েছি।’
এর আগে গত মঙ্গলবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও কেরানীগঞ্জ থেকে কিশোর গ্যাংয়ের ৫০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১০। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এর কয়েক দিন আগে মোহাম্মদপুরের হাউজিং সোসাইটিতে অভিযান চালিয়ে কিশোর গ্যাংচক্রের মূল হোতাসহ পাঁচজনকে দেশি-বিদেশি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৩।
এ বিষয়ে র্যাব-৩-এর পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও এর আশপাশের এলাকায় ‘ধাক্কা দে’ ও ‘ডায়মন্ড’ নামের দুটি কিশোর গ্যাংয়ের নানা অপরাধের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন জুলফিকার আলী ও তাঁর সহযোগীরা।
কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের পেশায় কেউ রাজমিস্ত্রি, কেউ চা-বিক্রেতা কিংবা প্রাইভেট কারচালক। তাঁরা দৃশ্যমান পেশার আড়ালে মূলত কিশোর গ্যাং পরিচালনা করতেন।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর তালিকা অনুযায়ী, দেশে অন্তত পাঁচ শতাধিক কিশোর গ্যাং রয়েছে। এর মধ্যে র্যাবের তালিকায় রয়েছে ৮২টি। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তালিকা অনুযায়ী, রাজধানীতে ৫২টি কিশোর গ্যাং রয়েছে। ডিএমপির আটটি অপরাধ বিভাগের অধীন ৩৫টি থানা এলাকায় এসব চক্রের সদস্যসংখ্যা প্রায় ৬৯২।
র্যাবের পক্ষ থেকে রাজধানীতে সক্রিয় এলাকাভিত্তিক ৮০টি কিশোর গ্যাংয়ের সুনির্দিষ্ট তালিকা করা হয়েছে। এই ৮০টি গ্যাংয়ের ৮০ জন গডফাদার রয়েছেন। আবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে সিটি করপোরেশনের ২১ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ শতাধিক কিশোর গ্যাং গডফাদারের নামের তালিকা তৈরি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান ডিআইজি হারুন অর রশীদ বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের গডফাদারদের তালিকা করে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
র্যাব মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন বলেন, সারা দেশে কিশোর গ্যাং গ্রুপের বড় ভাই ও গডফাদার গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।