যৌতুকের টাকার জন্য এক পাষণ্ড স্বামী স্ত্রীকে মারধরের পর সারারাত রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে রাখে খাটের সঙ্গে। নির্দয়ভাবে পিটিয়ে পুরো শরীর থেঁতলে দেয়। একটু পানির জন্য ছটফট করলে দেওয়া হয় মরিচের গুড়া মিশ্রিত পানি। যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকলে হাত-পা বাঁধা অবস্থাতেই ফেলে দেওয়া হয় বাড়ির সামনে পুকুরে।
নির্যাতিতা শিউলি জানান, বিয়ের পর থেকে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন যৌতুক হিসাবে তাঁর বাবার কাছ থেকে আসবাবপত্র নয়তো টাকা আনার জন্য চাপ দেয়। তিনি রিকশাচালক বাবার অক্ষমতার কথা জানিয়ে যৌতুক দিতে পারবেন না বলে স্বামীসহ সকলকে জানিয়ে দেন। এতে সকলেই অসন্তুষ্ট হন। এদিকে বিয়ের কিছুদিন পর তিনি সন্তানসম্ভবা হন। তারপরও যৌতুকের দাবিতে তাঁর ওপর নির্যাতন চলতেই থাকে। একপর্যায়ে ওষুধ খাইয়ে তাঁর গর্ভের সন্তান নষ্ট করা হয়। এ কাজে সহায়তা করে স্বামী রফিকুলের ভাইয়ের স্ত্রী রুমা আক্তার।
গৃহবধূ আরো জানান, গত শনিবার সকাল থেকে নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেন তাঁর স্বামী। বেধড়ক মারধর করার পর তাঁর হাত-পা বেঁধে শরীরে মরিচগোলা জল ঢালা হয়। পানি খেতে চাইলে মুখে সেই জল ঢেলে দেওয়া হয়। পরে পুরো শরীরে জ্বলন শুরু হলে শরীরে পানি দিতে চাইলে স্বামী তাকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বাড়ির সামনের পুকুরে ফেলে দেন। প্রায় পুরো দিন পুকুরে কাটিয়ে দেন।
দিনশেষে স্বামী তাঁকে নিয়ে বাবার বাড়ি ঈশ্বরগঞ্জের চরশিহারি গ্রামে যান। বাবার বাড়ির সামনে আসতেই তাঁকে ফেলে রেখে দ্রুত ছটকে পড়তে চাইলে তিনি গোঙাতে থাকেন। এ সময় আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে ঘটনাটি জানার পর পলায়নরত স্বামী রফিকুলকে আটকে থানায় খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে তাঁকে থানা নিয়ে যায়।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পীরজাদা সৈয়দ মোহাম্মদ মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, নির্যাতনের পর হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।