দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌরশহরের সুজাপুরস্থ আলহুদা বালিকা কওমি মাদ্রাসার এক নারী হাফেজ শিক্ষিকাকে (১৭) বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণসহ গর্ভপাতের মামলায় ওই মাদ্রাসার তত্ত্বাবধায়ক আল আমিনকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ।
ধর্ষণের শিকার ওই নারী হাফেজ বাদি হয়ে গত বুধবার (২১ জুলাই) রাত সাড়ে ১২ টায় সুজাপুরস্থ আলহুদা বালিকা কওমি মাদ্রাসার অন্যতম উদ্যোক্তা আল আমিন বিন আমজাদ (৩৫) ও একই মাদ্রাসার পরিচালক পৌরবাজারের জতাপট্টি এলাকার মৃত দবির উদ্দিনের চেলে আলী আলম রেজার (৩৮) বিরুদ্ধে ফুলবাড়ী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-১৮। ওই মামলায় পুলিশ পরদিন বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) রাতে আল আমিনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করেছেন। তবে অন্য আসামি পলাতক রয়েছেন।
থানায় দায়েরকৃত মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সুজাপুরস্থ আলহুদা বালিকা কওমি মাদ্রাসায় হাফেজ শিক্ষক হিসেবে চাকরি করার জন্য ওই নারী হাফেজকে তার বাড়িতে গিয়ে প্রস্তাব দেন আল আমিন ও আলী আল রেজা। পরে ওই নারী হাফেজ পদে চাকরিতে যোগদান করে মাদ্রাসাতেই অবস্থানসহ মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের পাঠদান শুরু করেন। চাকরিতে যোগদানের পর থেকেই ওই নারীর প্রতি খারাপ দৃষ্টি দেয় লম্পট আল আমিন। বিভিন্নভাবে প্রলোভন ও প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে তার সহযোগী আলী আল রেজার সহযোগীতায় চলতি বছরের ৩ মার্চ বিবাহ বিষয়ক একটি এভিডেভিট তৈরি করে সেই এভিডেভিটে ওই নারী হাফেজের স্বাক্ষর নিয়ে জানানো হয় আল আমিন এবং ওই নারী হাফেজ এখন থেকে সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী।
এরপর ওইদিন সন্ধ্যা ৭ টায় ওই মাদ্রাসার অফিস কক্ষে আল আমিন ওই নারী হাফেজের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে। এরপর থেকে আল আমিন ওই নারী হাফেজের সাথে নিয়মিতভাবে মাদ্রাসার অফিস কক্ষসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। এতে করে নারীটি গর্ভবতী হয়ে পড়েন। এ ব্যাপারে নারীটি আল আমিনকে তার বাড়িতে নেওয়ার কথা বললে সে গত ৭ জুলাই মাদ্রাসা থেকে নারী হাফেজের বাড়িতে নিয়ে যায়।
সেখানে বিয়ের কথাবার্তা বলে সেখানেও স্বামী-স্ত্রী হিসেবে রাত্রী যাপন করে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। পরদিন সকালে নারীকে তার বাবার বাড়িতে রেখে সেখান থেকে কেটে পড়ে আল আমিন। এরই এক পর্যায়ে গত ৮ জুলাই সন্ধ্যায় আবারও ওই নারীর বাড়িতে গিয়ে জোরপূর্বক ওষুধ খাইয়ে গর্ভপাত ঘটায় আল আমিন।
শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ও স্থির চিত্র ধারণ করে রেখেছে। এসব বাড়াবাড়ি করলে ওই হাফেজের নগ্ন ছবি ও অশ্লীল ভিডিও দৃশ্য নেটওয়ার্কিং এর ডিজিটাল ইলেক্ট্রনিক্সে ছড়িয়ে দেওয়া হুমকি দেয়।
ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশ্রাফুল ইসলাম বলেন, ওই নারী হাফেজের মামলায় আমিন বিন আমজাদকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। মামলার অপর আসামি আলী আল রেজাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।