বগুড়া প্রেসক্লাবের সভাপতির সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করায় সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) গোলাম রসুলকে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত (ক্লোজড) করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করবেন বলে বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী জানিয়েছেন।
জানা গেছে, বগুড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহমুদুল আলম নয়ন রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রেসক্লাবে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে চকযাদু রোডে তিনি যানজটে আটকা পড়েন। এসময় রাস্তার ওপরে সাদা রঙের একটি মাইক্রেবাস দাঁড় করিয়ে রাখার কারণে যানজট সৃষ্টি হয়েছে দেখতে পান। তিনি মোটরসাইকেল নিয়ে সামনে গিয়ে চালককে মাইক্রোবাসটি সামনের দিকে এগিয়ে নিতে বলেন।
এতে চালকের আসনে থাকা সাদা পোশাকের ব্যক্তি ক্ষিপ্ত হয়ে মাইক্রোবাসের ভেতর থেকেই প্রেসক্লাবের সভাপতির মোটরসাইকেলের চাবি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালান। এতে ব্যর্থ হয়ে ওই ব্যক্তি ফিল্মি কায়দায় মাইক্রেবাসের দরজা লাথি দিয়ে খুলে নেমে গিয়ে মোটরসাইকেলের চাবি ছিনিয়ে নেন। ঘটনার আকস্মিকতায় প্রেসক্লাব সভাপতিসহ পথচারীরা হতভম্ব হয়ে পড়েন।
এসময় তিনি নিজেকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে গাড়ি সরিয়ে নিতে বলার কারণে মোটরসাইকেলের কাগজপত্র দেখতে চান। পরিস্থিতির বিষয়টি প্রেসক্লাব সভাপতি তাৎক্ষণিক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলী হায়দার চৌধুরীকে অবহিত করলে ওই ব্যক্তি চাবি ফিরিয়ে দিয়ে চলে যান। বিষয়টি বগুড়ায় কর্মরত সংবাদ কর্মীরা জানার পর পরই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তারা বিষয়টির প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করে পুলিশ সুপারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
ইতোমধ্যে কয়েকজন সংবাদ কর্মী পুলিশ পরিচয় দেওয়া ব্যক্তির ব্যবহৃত মাইক্রোবাসের নম্বর (ঢাকা-মেট্রো-চ-৭১-৩২৭৩) বিষয়ে বিআরটিএ তে গিয়ে সন্ধান শুরু করলে বিআরটিএ’র দফতর থেকে জানানো হয়, তাদের অনলাইন সার্ভারে এ নাম্বারের গাড়ির কোনো তথ্য নেই। কারণ ‘চ-৭১’ সিরিয়ালের কোনো গাড়ির রেজিস্ট্রেশন বিআরটিএ-তে হয়নি। যদিও বগুড়ার ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন চ সিরিয়ালের গাড়ি সাধারণত অ্যাম্বুলেন্সে ব্যবহৃত হয়, তবে ওই নম্বরটি আদৌ সঠিক কি-না তা যাচাই করতে গাড়িটি জব্দ করা হয়েছে।
বগুড়া পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করার পর পুলিশ সুপার পুরো বিষয় জানার পর তাৎক্ষণিক গোলাম রসুল নামে ওই এসআইকে বগুড়া পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করার নির্দেশ দেন। তিনি পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলী হায়দার চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের এক তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটি আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে বলে পুলিশ সুপার সাংবাদিক নেতৃবৃন্দকে জানান।
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন