গোলাম রব্বানী শিপন, বগুড়াঃ বগুড়ার শিবগঞ্জে চাঞ্চল্যকর সিফাত (১৩) হত্যাকাণ্ডের ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে রহস্য উদঘাটন ও তারই বন্ধু নামক ঘাতককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার ২৮ ডিসেম্বর দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ে বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী সাংবাদিকদের জানান, সিফাত হত্যা মূলত ‘ফ্রি ফায়ার’ গেম খেলাই হলো তার জীবনের কাল।
তার বন্ধুর সাথে “ফ্রি ফায়ার” গেম নিয়ে পূর্বে দ্বন্দ্বের জেরেই কে হত্যা করা হয়। কিশোর সিফাত হত্যার পরপরই রহস্য উদঘাটনে তদন্তে নামে পুলিশ। এরপর নিবিড়ভাবে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় খুনির অবস্থান নিশ্চিত করে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ঢাকার মনিপুরীপাড়া থেকে একই বয়সের খুনি সিফাতের বন্ধু কে গ্রেপ্তার করা হয়। আইনি বিধিনিষেধ থাকায় অপ্রাপ্ত বয়সী কিশোর অপরাধী হত্যাকারীর নাম প্রকাশ করা গেল না।
পরে পুলিশ সিফাতের খুনি ঘাতককে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে খুনের লোমহর্ষক বর্ণানা দিয়ে বলেন, সিফাত এবং সে ২জন বন্ধু ছিলেন। তারা মোবাইলে ফ্রি ফায়ার গেম খেলত। কিছুদিন আগে নিহত সিফাতের মোবাইল ফোনে থাকা গেমের আইডি ও পাসওয়ার্ড সুকৌশলে হাতিয়ে নেয়। পরে সেই গেমের অন্য পাসওয়ার্ড সেট করেন। একপর্যায়ে সিফাত যখন বুঝতে পারে তার গেমের পাসওয়ার্ড কাজ করছে না। তখন তার হত্যাকারী বন্ধুকে পাসওয়ার্ডের জন্য সিফাত ও তার কয়েকজন বন্ধু মিলে চাপ দিলে সে পাসওয়ার্ডসহ পুনরায় গেম ফেরত দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে ওই খুনী কিশোর। সিফাতকে শেষ করার জন্য সেখান থেকেই সুযোগ খোঁজে খুনি।
এরই ধারাবাহিকতায় সিফাতের বোনের একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন নষ্ট হয়ে যায়। গত সোমবার সিফাত তার বোনের মোবাইল ফোন মেরামতের জন্য বিকালে বাড়ি থেকে বের হলে তার বন্ধু সাথে দেখা হয়। তার কিশোর বন্ধু সে সিফাতকে নানা প্রলোভনে তার দাদার বাড়ি বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার বুড়িগঞ্জ ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামে বেড়াতে নিয়ে যায়।
পরে নিশ্চিন্তপুর গিয়ে একটি বাঁশবাগানে গল্পের ফাঁকে একটি ধারালো চাপাতি দিয়ে গলায় আঘাত করে। এসময় সিফাত মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তার মুখ চেপে ধরে জবাই করে এবং বাম হাতের কবজির রগ কেটে হত্যা নিশ্চিত হত্যাস্থল ত্যাগ করেন।
উল্লেখ্য, নিহত সিফাত বগুড়া শহরের নুরানী মোড় খাঁ পাড়ার শাহ আলমের পুত্র এবং এলাকার প্রভাতী পাবলিক এ্যান্ড স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ঘটনার রাতেই সিফাতের বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনাম আসামি করে শিবগঞ্জ মামলায় মামলা দায়ের করেন।