বগুড়ায় ধান ক্ষেতের মধ্যে পড়ে থাকা অজ্ঞাত লাশের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত প্রধান সন্দেহভাজন ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে দুপচাঁচিয়া থানা পুলিশ।
পুলিশ জানায়, চুরি-ছিনতাইয়ের কাজে বাধা দেয়ায় বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় ভাই ও বন্ধুরা মিলে হত্যা করে কিশোর মালেক সরদারকে। হত্যাকান্ডে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের পর এমন দাবি করেছে দুপচাঁচিয়া থানা পুলিশ। শনিবার বেলা ১২টায় সংবাদ সম্মেলনে আদমদীঘি-দুপচাঁচিয়া সার্কেলের সিনিয়র এএসপি নাজরান রউফ এসব তথ্য জানান।
এর আগে গত শুক্রবার দুপচাঁচিয়ার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে হত্যায় অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত তিনজন হলেন আদমদীঘি উপজেলার মুড়–ইল তালুকদারপাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মাহবুব আলম, চেঙ্গা গ্রামের মো. গোলাম মোস্তফার ছেলে মো. মোক্তার (২১) ও চেঙ্গা ছাতিয়াগাড়ী গ্রামের মৃত হাসত আলী ওরফে হাসোর ছেলে মো. তারেক (২১)। এদের মধ্যে তারেক নিহত মালেকের আপন ভাই ।
সংবাদ সম্মেলনে সিনিয়র এএসপি নাজরান রউফ জানান মাহবুব, মোক্তার ও তারেক একসাথে উপজেলার বিভিন্ন চুরি ছিনতাই ও মাদক সেবন করে বেড়াতেন। এসব বিষয় জানতো তারেকের ভাই মালেক। সে তার ভাই তারেককে এসব অপরাধ না করার জন্য নিষেধ করতো এবং বিষয়টি পুলিশকে জানানোর ভয় দেখিয়ে আসছিলো। এরই ধারাবাহিকতায় হত্যার তিন থেকে চারদিন আগে তারেককে মারধর করে মালেক। এর জেরে তারেক ও অন্যরা মালেককে হত্যার পরিকল্পনা করে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার রাতে ধানক্ষেতে শ্বাসরোধ করে মালেককে হত্যা করে অভিযুক্ত তিন জন।
তিনি আরো জানান, রাতে মালেক ও মোক্তার একসাথে কাজ শেষে ফিরছিল। তার কথাবার্তা সন্দেহমূলক হওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদের পর ঘটনাটি বের হয়। এরপর অভিযান চালিয়ে বাকিদের আটক করা হয়। আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার বিষয়টি স্বীকারও করে। গ্রেফতারকৃতদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, বগুড়ার দুপচাঁচিয়া চেঙ্গা মহল্লা বাড়ির পাশের ধান খেত থেকে গত শুক্রবার সকালে মালেক সরদার নামের এক কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মালেক দুপচাঁচিয়া সিও অফিস বাসস্ট্যান্ডের একটি মুরগী দোকানের কর্মচারী ছিল। মরদেহ উদ্ধারের পর নিহত মালেকের মা তারা বানু জানিয়েছিলেন মালেক প্রতিদিনই ঠিক সময়েই দোকান থেকে বাড়িতে ফিরতো। বৃহস্পতিবার রাতে সে বাড়ি না ফেরায় বিভিন্ন জায়গায় তাকে খোঁজাখুজি করা হয়। শুক্রবার সকালে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে বাড়ির পাশের ধান ক্ষেতে মালেকের মরদেহ দেখতে পান তিনি।