বরগুনার তালতলীতে জমিজমা নিয়ে পূর্বশত্রুতার জেরে লাথি মেরে তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা নানিশাশুড়ির গর্ভপাতের অভিযোগ উঠেছে নাতজামাইয়ের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী ওই নারীর নাম ফাতিমা বেগম (১৯)। অভিযুক্ত মনির হোসেন প্রতিবেশী নাতজামাই।
গত বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) উপজেলার নিশানবাড়ী ইউনিয়নের খোট্টারচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর স্বামী সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে তালতলী থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মৃত চানু মিয়ার পুত্র মনিরের সঙ্গে প্রতিবেশী নানাশ্বশুর সোহরাব হোসেনের দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক ও জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। গত ১৮ আগস্ট বিকেলে সোহরাব হোসেনের স্ত্রী ফাতিমা বেগম বাড়ির পাশে বিরোধপূর্ণ জমিতে মাটি কাটতে যান।
মাটি কাটা নিয়ে নাতজামাই মনিরের সাথে তার কথা-কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে অন্তঃসত্ত্বা ফাতিমা বেগমের পেটে লাথি মারেন মনির। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে পড়ে গিয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হয় তার। তাৎক্ষণিক পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। শুক্রবার রাতে ফাতিমা বেগমের গর্ভপাত হয়।
সোহরাব হোসেন বলেন, ‘নাতজামাই মনির জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্র তৈরি করে আমাদের সম্পত্তি দখল করার চেষ্টা চালায়। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মনিরের সাথে বিরোধ চলে আসছে। ঘটনার দিন আমার তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ওই জমিতে মাটি কাটতে গেলে মনিরসহ আরো ১৫-২০ জন আমার স্ত্রীকে মারধর করে।
এতে তার প্রচুর রক্তক্ষণ হয়। এ অবস্থায় স্ত্রীকে থানায় নিয়ে গেলে তারা চিকিৎসকের কাছে যেতে বলে। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিলে রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়। গতকাল শুক্রবার আবারও অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে ভর্তি করাই। রাতেই তার গর্ভপাত হয়। ’
মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত নাতজামাই মনির বলেন, ‘তারা আমাকে ফাঁসানোর জন্য ওষুধের মাধ্যমে আমার নানিশাশুড়ির গর্ভপাত করিয়েছেন। ’
তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ডা. খোশনুর রাব্বি বলেন, অসুস্থ অবস্থায় ওই নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দিলে মোটামুটি সুস্থ হয়।
পরে ওই নারীর হঠাৎ গর্ভপাত হয়। প্রচণ্ড আঘাতের কারণে গর্ভপাত হতে পারে বা নরমালিও গর্ভপাত হতে পারে। তবে কী কারণে হয়েছে সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তারপরে বলা যাবে।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, এ বিষয়ে মারধরের একটি অভিযোগ থানায় দেওয়া হয়েছে।
তবে গর্ভপাতের কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।