নাটোরের গুরুদাসপুরে মামলা তুলে নিতে সুখী ও সুমি নামে দুই বোনকে মারধর এবং পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে তাদের দুই স্বামীর বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে পৌরসভার খামারনাচকৈড় মহল্লায় হযরত মোল্লার বাড়িতে তার দুই মেয়ের ওপর এ নির্যাতন চালানো হয়। তারা এখন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সুখীর স্বামী হলেন আলমগীর হোসেন ও সুমির স্বামী সবুজ আলী।
স্থানীয় সূত্র জানায়, যৌতুকের জন্য শারীরিক নির্যাতন ও অনুমতি ছাড়া শ্যালকের স্ত্রীকে দ্বিতীয় বিয়ে করার অভিযোগে তিন বছর আগে স্বামী আলমগীরের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করেন সুখী। অন্যদিকে গত জানুয়ারি মাসে সুখীর ছোট বোন সুমি স্বামী সবুজের বিরুদ্ধে যৌতুকের অভিযোগে মামলা করেন। এ সময় সবুজ সুমির কাছে তালাকনামা পাঠান।
রাতে আলমগীর ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী রোজিনা এবং সবুজ ও তার বোন ঋতু মিলে হযরত মোল্লার বাড়িতে ঢুকে সুখী ও সুমিকে মামলা তুলে নিতে এবং তালাকের কাগজে স্বাক্ষর দিতে বলেন। এতে দুই বোন অস্বীকৃতি জানালে তাদের মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে সুখীর শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এতে সুখীর ডান হাত ও মাথার চুল কিছুটা পুড়ে যায়।
এ সময় সুখীর দোকানের ড্রয়ার থেকে টাকাও বের করে নেন তারা। সুখী ও সুমির চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে মারধরকারীরা পালিয়ে যান। এলাকাবাসী দুই বোনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক আব্দুস সালাম বলেন, ‘সুখী ও সুমির শরীরে বিভিন্ন অংশে জখমের চিহ্ন রয়েছে। সুখীর ডান হাত ও মাথার চুল কিছুটা পুড়ে গেছে।’
ভুক্তভোগী দুই বোনের বাবা হযরত মোল্লা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার দুই মেয়েকে বিভিন্নভাবে অত্যাচার-নির্যাতন ও ষড়যন্ত্র করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর প্রতিবাদে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়। মামলা তুলে না নেওয়ায় এবং তালাকনামা গ্রহণ না করায় আলমগীর ও সবুজ পরিকল্পিতভাবে তার বাড়িতে আক্রমণ করে মারধর, ভাঙচুর ও পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টা করে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সবুজ মোবাইল ফোনে বলেন, ‘এ অভিযোগ সত্য নয়। সুমি আমার অবাধ্য। তাই তাকে তালাক দিয়েছি।’
তবে অভিযুক্ত আলমগীরের মোবাইল ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
মারধর ও পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার বিষয়ে জানতে চাইলে গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মতিন বলেন, ‘এ ব্যাপারে মামলা রুজু হয়েছে। আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।