দিনের আলোতে সারা উপজেলায় ঘুরাঘুরি করে বিয়ের জন্য অবিবাহিত ছেলে-মেয়ের ছবি সংগ্রহ করা তার পেশা। বাড়ি বাড়ি গিয়ে পাত্র-পাত্রীর ছবি দেখিয়ে বিভিন্নভাবে অভিভাবকদের আস্থা অর্জন করাই তার দিনের প্রধান কাজ।
কিন্তু রাত হলেই বেরিয়ে পড়েন গরু, অটোরিকশা কিংবা জেলেদের মাছ ধরার নৌকা চুরি করতে। এমনই এক চক্রের সদস্যকে আটক করেছে স্থানীয় জনতা। ঘটনাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার সরদর ইউনিয়নের নাসিরপুর গ্রামের।
শনিবার ভোর ৪টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের নাসিরপুর গ্রামের পশ্চিম পাড়া এলাকার শ্রমিক আছকির মিয়ার বাড়িতে সিঁধ কেটে গরু চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েন আব্দুল মোতালিব নামে এক বিয়ের ঘটক। স্থানীয়রা গণধোলাই দিয়ে তাকে ইউপি সদস্যের জিম্মায় দিয়ে আসে। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
আটক চোরের বাড়ি মাধবপুর উপজেলার বানেশ্বর গ্রামে। তিনি ওই উপজেলার ওহাদুল্লার ছেলে। তবে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করে নাসিরনগর উপজেলার ফান্দাউক ইউনিয়নে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা সদরে হঠাৎ গরু, অটোরিকশা চুরি ও মানুষের ঘরে সিঁধ কাটার উপদ্রব বেড়ে গেছে। সারা রাত পাহারা বসিয়েও চুরি ঠেকানো যাচ্ছে না। শনিবার ভোর ৪টার দিকে নাসিরনগর সদর ইউনিয়নের নাসিরপুর গ্রামের দিনমজুর আছির মিয়ার বাড়িতে ৫-৬ জনের একটি দল চুরির উদ্দেশ্যে যায়।
আছির মিয়ার স্ত্রী বিষয়টি বুঝতে পেরে চিৎকার দেয়। আশপাশের লোকজন ছুটে এসে চোরদের ধাওয়া করে। পালানোর চেষ্টাকালে আব্দুল মোতালিব নামে একজনকে ধরে ফেলে। এ সময় স্থানীয়রা তাকে গণপিটুনি দিলে মোতালিব অচেতন হয়ে পড়েন।
ইউপি সদস্য চিত্ত রঞ্জন বলেন, খবর পেয়ে সকালে আছিরের বাড়ি থেকে আব্দুল মোতালিবকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
অভিযুক্ত আব্দুল মোতালিবের সঙ্গে হাসপাতালে গিয়ে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমি বিয়ের ঘটক। চুরির বিষয়টি সঠিক না।’
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহাগ রানা সমকালকে বলেন, আব্দুল মোতালিব একজন ঘটক। শনিবার ভোরে গরু চুরির অভিযোগে স্থানীয়রা তাকে আটক করে। গণধোলাই দিয়ে স্থানীয়রা তার দুই পা ভেঙে দিয়েছে। তবে এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি।