নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের পূর্বভবনাথপুর এলাকা হতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে বিদেশি পিস্তল ও গুলিসহ ডাকাত সর্দার রনিসহ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। র্যাব-১১’র অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা শুক্রবার দুুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীস্থ র্যাব-১১’র ব্যাটেলিয়ন সদর দফতরে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
গ্রেফতাররা হলেন ডাকাত সর্দার সাখাওয়াত হোসেন রনি (২৫), মো. সোহেল (৩২), মো. শহিদুল ইসলাম (২৬), আল আমিন (২৩), মো. ইসমাইল (৩৮) ও সুজয় দে (৩০)। এ সময় ম্যাগজিন ভর্তি ১টি বিদেশি পিস্তল, ১ রাউন্ড তাজা গুলি, ১ রাউন্ড গুলি (ব্লাংক), ১টি ছোরা, ১টি রামদা, ১টি চাইনিজ কুড়াল, ২টি তালা ভাঙ্গার শাবল উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১১’র অধিনায়ক লে. কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা জানান, ডাকাত সর্দার রনি নিজস্ব ড্যান্স একাডেমির কার্যক্রমের অন্তরালে ডাকাতি করে আসছিলেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার রনি র্যাবকে জানান, তিনি নিজেকে কাঁচপুর এলাকায় “বন্ধু ড্যান্স একাডেমি” নামক একটি ডান্স গ্রুপের গ্র্যান্ডমাস্টার হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন। বিভিন্ন সময়ে বিয়ে, জন্মদিন বা অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠান উপলক্ষে ড্যান্স, কনসার্ট নামে বিভিন্ন প্রবাসী বা ধনী ব্যক্তির বাড়ি টার্গেট করেন। ভিকটিমের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলেন। পরবর্তীতে তিনি তার টার্গেট করা বাড়িগুলোতে পরিকল্পনা অনুযায়ী ডাকাতি করেন।
তিনি আরও জানান, গ্রেফতাররা দীর্ঘদিন যাবৎ নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা ও গোপালগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলার প্রবাসীদের বাড়িতে অথবা বিভিন্ন ব্যবসায়ী বা আর্থিকভাবে সচ্ছল পরিবারগুলোকে টার্গেট করে পরিকল্পিতভাবে তাদের ডাকাতি কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন। তারা গভীর রাতে নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার বাসা-বাড়িতে অতর্কিতভাবে হাজির হয়। তারা ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে জনমনে ভয়ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে সাধারণ লোকজনদের জিম্মি করেন। এরপর ডাকাতি করে সিএনজি অথবা মোটরসাইকেলযোগে দ্রুত ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যান। দুষ্কৃতিকারী এ ডাকাত দলের সদস্যরা ডাকাতি করতে গিয়ে জনসাধারণকে মারধর, ছুরিকাঘাত ও গাড়ি ভাঙচুরসহ গুরুতর জখমও করেন।
র্যাব-১১’র অধিনায়ক আরও জানান, গ্রেফতার ডাকাত সর্দার সাখাওয়াত হোসেন রনির বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে আড়াইহাজার থানায় ৩টি ও সোনারগাঁও থানায় ১টি অস্ত্রসহ ডাকাতির মামলা, মো. সোহেলের বিরুদ্ধে আড়াইহাজার থানায় ৩টি ও সোনারগাঁও থানায় ১টি অস্ত্রসহ ডাকাতি ও ১টি মাদক মামলা, মো. শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ধামরাই থানায় ১টি অস্ত্রসহ ডাকাতি ও ২টি ধর্ষণ এবং বিভিন্ন থানায় ৪টি অস্ত্রসহ ডাকাতি মামলা, সুজয় দে’র বিরুদ্ধে গোপালগঞ্জ থানায় ১টি চুরি ও মকছেদপুর থানায় ১টি ধর্ষণসহ হত্যা মামলা রয়েছে।
এ ছাড়া গ্রেফতার সাখাওয়াত হোসেন রনি ও সোহেলকে ইতোপূর্বে র্যাব-১১ গ্রেফতার করেছিল। তাছাড়া গ্রেফতার ডাকাত চক্রটি চলতি বছরের ৬ এপ্রিল ও ২৪ এপ্রিল আড়াইহাজার থানা এলাকায় সংঘটিত ডাকাতির ঘটনায় জড়িত ছিল মর্মে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রতিক্রিয়াধীন বলে তিনি জানান।